ফব অফিসের পাশেই পচাগলা দেহ, চাঞ্চল্য

মধ্য কলকাতার জনবহুল চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য দফতর। তারই পিছনের গলিতে পাওয়া গেল একটি পচাগলা মৃতদেহ। রবিবার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৪
Share:

উদ্ধার: ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য দফতরের পিছনের গলিতে পাওয়া দেহ নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। রবিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

মধ্য কলকাতার জনবহুল চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য দফতর। তারই পিছনের গলিতে পাওয়া গেল একটি পচাগলা মৃতদেহ। রবিবার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।

Advertisement

ফব দফতরের পাশেই রয়েছে একটি হোটেল। কয়েক দিন ধরেই সেখানে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। তাই সাফাইকর্মীদের দিয়ে বিশেষ ভাবে ঘরদোর সাফ করাচ্ছিলেন হোটেলের মালিক। তাঁরা ভেবেছিলেন, ইঁদুর মরেছে। এ দিনও সাফাইয়ের কাজ চলে, কিন্তু গন্ধের উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশেষে দুপুরে সাফাইকর্মীরা ফব দফতরের পিছনের গলি পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখেন, একটি দলা পাকানো মানবদেহ পড়ে আছে। চামড়া গলে গিয়ে বেরিয়ে পড়েছে হাড়। পুলিশের অনুমান, অজ্ঞাতপরিচয় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েক দিন আগে।

পুলিশ জানায়, ফব দফতরের পুরনো ভবনের নীচের তলায় একটি গুদামঘর আছে। তার পাশেই কয়েক ফুট চওড়া সরু গলি। সেখানেই দেহটি চিত হয়ে পড়ে ছিল। মুখের উপরের অংশ, হাত ও শরীরের বেশ কিছু জায়গায় চামড়া গলে পড়ে হাড় বেরিয়ে পড়েছিল। প্রশ্ন উঠেছে, কয়েক দিন ধরে দেহ পড়ে থাকলেও কেউ কিছু বুঝতে পারলেন না কেন?

Advertisement

সামান্য কয়েক ফুটের গলিটির এক দিকে পাঁচিল। এক পাশে ফব দফতর, অন্য পাশে একটি বাড়ির পিছনের অংশ। চারতলা হোটেলের পিছনটা চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের দিকে। পাঁচিলের ও-পাশে একটি ফাঁকা জমি। এলাকার বাসিন্দাদের প্রশ্ন, মৃত্যু ওখানেই হয়েছে, নাকি দেহ এনে ফেলা হয়েছিল? যদি দেহটি ওখানে এনে ফেলে দেওয়া হয়, কে বা কারা তা ফেল গেল?

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পরে ডিসি (সেন্ট্রাল) শুভঙ্কর সিংহ সরকার বলেন, ‘‘দেহটি দেখেই মনে হচ্ছে, বেশ কয়েক দিন আগে মৃত্যু হয়েছে। ময়না-তদন্তের পরে বোঝা যাবে, কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে। মৃতের পরিচয় জানারও চেষ্টা চলছে।’’

ফব নেতৃত্বের বক্তব্য, ওই গলি কেউ ব্যবহার করেন না। পুরনো বাড়ির চারতলায় থাকতেন ফব-র প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ। তাঁর মৃত্যুর পরে ওই ঘরের জানলাও ইদানীং খোলা হয় না। তাই নীচের গলিতে মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালেও কেউ প্রথমে টের পাননি। সাফাইকর্মী সপ্তাহে এক দিন ওই গলি পরিষ্কার করেন। তিনিই এ দিন পরিষ্কার করতে গিয়ে দেহটি দেখতে পান। ফব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের কোনও কর্মী নিখোঁজ ছিলেন না। এর সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই। জায়গাটা প্রায় ‘কমন প্যাসেজ’। দফতরে যাঁরা থাকেন, তাঁরা আগে কিছু বুঝতে পারেননি।’’

ফব-কর্মী সন্দীপ বসু জানান, শনিবার তীব্র গন্ধ পেয়ে তাঁরা ব্লিচিং পাউডার ছড়িয়েছিলেন। ভুতু নামে এক সাফাইকর্মী এ দিন ওই গলিতে গিয়ে দেহটি দেখতে পান। ভুতু বলেন, ‘‘খুব গন্ধ বেরোচ্ছে বলে আমি ওই গলি পরিষ্কার করে ব্লিচিং ছড়াতে গিয়েছিলাম। কিছুটা পরিষ্কারও করি। কিন্তু পাঁচিলের দিকে এগোতেই দেখি, দলা পাকিয়ে পড়ে আছে একটি দেহ। পড়িমড়ি করে দৌড়ে গিয়ে সন্দীপদাকে খবর দিই।’’ ওই দফতরেই থাকেন ফব-কর্মী গোপাল ধাড়া। তিনিও জানান, দুর্গন্ধ পেয়ে ভেবেছিলেন ইঁদুর মরেছে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement