কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে নির্মাণ সহায়কদের কাঠগড়ায় তুলেছে ব্লক প্রশাসন। ফাইল চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন সভায় বার বার কর্মসংস্কৃতির উপরে জোর দেন। কাজে ফাঁকি দিলে তিনি যে ছেড়ে দেবেন না তাও জানিয়েছেন। আর তা যে নেহাত কথার কথা নয়, তার প্রমাণ মিলল পূর্ব মেদিনীপুরে। একশো দিনের কাজে প্রকল্প রূপায়ণে পিছিয়ে পড়ার জন্য কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে নন্দকুমার ব্লকের পাঁচ নির্মাণ সহায়ককে শো-কজ করলেন বিডিও।
নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার বেরা বলেন, পাঁচটি গ্রামপঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ককে বিডিও শোকজ করেছেন বলে জানতে পেরেছি. তবে ঠিক কি কারনে শোকজ করা হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখছি।
একই ব্লকের পাঁচটি পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ককে শো-কজের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার নন্দকুমারের ওই বিডিও পাঁচ নির্মাণ সহায়ককে শো-কজের চিঠি দিয়েছেন। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একশো দিনের কাজে বিভিন্ন প্রকল্প তৈরির দায়িত্ব থাকে গ্রাম পঞ্চায়েতে নিযুক্ত নির্মাণ সহায়কদের উপর। পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাস্তা নির্মাণ, রাস্তা পাকা করা, পুকুর খনন, বাড়ি তৈরির জন্য নিচু জমিতে মাটি ভরাট, বৃক্ষরোপণ-সহ বিভিন্ন কাজের জন্য স্কিম তৈরি করেন নির্মাণ সহায়কেরা। ওই সব স্কিম জেলাস্তরে অনুমোদিত ও অর্থ বরাদ্দের পর বাস্তবায়িত করা হয়। এর জন্য প্রতি আর্থিক বছরে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কাজের প্রকল্প নেওয়া হয়ে থাকে। ২০১৭–’১৮ আর্থিক বছরে পূর্ব মেদিনীপুরে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে গড়ে ৫৫ দিনের কাজ হয়েছে। জেলার ২৫ টি ব্লকের মধ্যে নন্দকুমার ব্লকে এই প্রকল্পে গড়ে ৫৬ দিন কাজ হয়েছে। কিন্তু ২০১৮-’১৯ আর্থিক বছরে গত তিন মাসে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজের গতি নন্দকুমার ব্লকে বেশ কমেছে বলে অভিযোগ। এর মধ্যে পাঁচটি পঞ্চায়েতে কাজের গতি আরও কম বলে দাবি। অভিযোগ, ব্লকের ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে শীতলপুর, সাওড়াবেড়িয়া জালপাই-১, চকশিমুলিয়া, কল্যাণপুর, বাসুদেবপুরে ১০০ দিনের প্রকল্প রূপায়ণ ঠিকমত না হওয়ায় এলাকার শ্রমিকেরা বেশি দিন কাজ পাননি। যার ফলে ওই পঞ্চায়েতগুলিতে অনেক স্কিমের কাজ বকেয়া পড়ে। রাস্তাঘাটের কাজ ছাড়াও ফলের গাছ লাগানোর স্কিমও পড়ে রয়েছে। ফলে জবকার্ড থাকা সত্ত্বেও শ্রমিকরা কাজ পাননি।
আর সেই কারণেই ওই সব পঞ্চায়েতে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে নির্মাণ সহায়কদের কাঠগড়ায় তুলেছে ব্লক প্রশাসন। আগামী তিনদিনের মধ্যে তাঁদের কাছে এর কারণ জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন বিডিও। যদিও শো-কজের চিঠি নিয়ে নির্মাণ সহায়করা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তৃণমূল পরিচালিত শীতলপুর (পশ্চিম) পঞ্চায়েতের প্রধান হাসমত আলি বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজে এই পঞ্চায়েত খুব একটা পিছিয়ে নেই। বর্ষার জন্য কিছু স্কিমের কাজের ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়েছিল। তবে আমরা দ্রুত তা রূপায়ণের চেষ্টা করছি।’’