গোবিন্দভোগের বরাত দিচ্ছে কানাডা, জার্মানিও

দক্ষিণ ভারতের বাজার আগেই ধরে ফেলেছিল। এখন দেশের বাইরেও ক্রমে চাহিদা বাড়ছে গোবিন্দভোগ চালের। পূর্ব বর্ধমানের রায়নায় উৎপাদিত গোবিন্দভোগ জাহাজে পাড়ি দিচ্ছে পশ্চিম এশিয়া থেকে ব্রাজিল, শ্রীলঙ্কায়।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৯
Share:

দক্ষিণ ভারতের বাজার আগেই ধরে ফেলেছিল। এখন দেশের বাইরেও ক্রমে চাহিদা বাড়ছে গোবিন্দভোগ চালের। পূর্ব বর্ধমানের রায়নায় উৎপাদিত গোবিন্দভোগ জাহাজে পাড়ি দিচ্ছে পশ্চিম এশিয়া থেকে ব্রাজিল, শ্রীলঙ্কায়। মাঝেমধ্যে সরকারি ভাবে জার্মানি, কানাডা এবং ইংল্যান্ড থেকেও বরাত আসছে।

Advertisement

রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, “দিল্লিতে সেরা চালের সম্মান পেয়েছিল গোবিন্দভোগ। তার পর বিদেশের বাজার খুলে গিয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারও বলেন, “গোবিন্দভোগ চাল বিদেশে রফতানির জন্য সরকার সব সময় সাহায্য করছে। সংগঠিত ভাবে বিদেশের বাজার ধরতে চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে দ্রুত বৈঠক করব।”

গোবিন্দভোগ চাষ হয় খরিফ মরসুমে। চাষিদের দাবি, উচ্চ ফলনশীল ধান যেখানে বিঘে পিছু ১৬ বস্তার বেশি হয় না, গোবিন্দভোগ সেখানে মেলে ১১ বস্তা। পরিমাণে কম হলেও আর পাঁচটা ধানের মতো কখন দাম বাড়বে, সেই আশায় বসে থাকতে হয় না চাষিদের। উৎপাদনের খরচের প্রায় চার গুণ দাম পান তাঁরা। চাষিদের দাবি, জমি থেকে ধান মড়াই তোলা পর্যন্ত বিঘে প্রতি ৬-৭ হাজার টাকা খরচ হয়। অথচ সাধারণ ধানের থেকে প্রতি বিঘেয় প্রায় ১৬ হাজার টাকা বেশি লাভ মেলে গোবিন্দভোগে। শুধু গোবিন্দভোগ ধান থেকে চাল করার জন্য রায়নায় ২০টি চালকল গড়ে উঠেছে। বর্ধমান গোবিন্দভোগ মিলার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, দু’বছরে দেশ-বিদেশে মিলিয়ে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার চাল রফতানি হয়েছে। প্রায় এক লক্ষ মেট্রিক টন চাল বাইরে যায়। ওই সংগঠনের সভাপতি শ্যামল রায় বলেন, “বিদেশের বাজার আরও বেশি ধরাই আমাদের লক্ষ্য।”

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন গোবিন্দভোগ চালের দক্ষিণের বাজারের বহর শুনে রায়নার চাষি ও চালকল মালিকদের অভিনন্দন জানিয়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ২০১১-র শেষে দিল্লির প্রগতি ময়দানে ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারে রায়নার গোবিন্দভোগ দিয়ে তৈরি পায়েস অতিথিদের খাইয়ে বাহবা পান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর জোর দেওয়া হয় বিদেশে রফতানিতে। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট ডিন সঞ্জয় দত্ত রায় কিংবা রাজ্যের উপ-কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়রা বলেন, “স্রেফ জৈব সার দিয়ে গোবিন্দভোগ ধান উৎপাদন করার জন্য চাষিদের উৎসাহিত করছি। তা হলে বিদেশের বাজার আরও ভাল ধরা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন