প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের মধ্যে। শনিবার দুপুরে যার আঁচ পেলেন দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা মণ্ডল। শুক্রবার রাতে দেগঙ্গার কাহারপাড়ার বাসিন্দা সীমা কাহার (৪০) মারা যান নীলরতন সরকার হাসপাতালে। শনিবার তাঁর বাড়িতে যান রহিমা। বিধায়কের গাড়ি ঘিরে গ্রামবাসীরা বলেন, ‘‘এত দিন দেখা নেই, এখন কী করতে এসেছেন? চলে যান।’’ আঙুল তুলে চিৎকার করতে থাকেন পুরুষ-মহিলারা। কেউ কেউ বলেন, ‘‘আমাদের সান্ত্বনা দরকার নেই। ভাল চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।’’
উত্তেজিত জনতাকে কিছু বোঝাতে চাইছিলেন রহিমা। সুবিধা করতে না পেরে এক সময়ে গাড়িতে উঠে এলাকা ছাড়েন। পরে বলেন, ‘‘শোকের মধ্যে ওঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবু আমরা যতটুকু করা যায়, সে ব্যবস্থা করছি।’’
সীমাদেবীর স্বামী রঞ্জনেরও জ্বর। ভর্তি ছিলেন মারাকপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। স্ত্রীর মৃত্যুসংবাদ পেয়ে বাড়িতে আসেন। হাতে স্যালাইনের চ্যানেল নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, “সব শেষ হয়ে গেল। এখন নেতা-নেত্রীরা এসে কী হবে?”
ক্ষোভ অন্যত্রও। মহেশতলার দিনু মিস্ত্রি বাগান এলাকার বাসিন্দা রবি পাল (৫২) শনিবার ভোরে মারা যান মোমিনপুরের একটি নার্সিংহোমে। এলাকায় জমা জল, নিকাশি নালা সাফাইয়ের দাবিতে পাহাড়পুর রোডের ফতেপুরে অবরোধ শুরু হয়। পুরসভার আবর্জনা-বোঝাই একটি কন্টেনারে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা।
জ্বরে ভুগে ছোট জাগুলিয়ার বহেরা গ্রামের রউফনারা বিবি (৩৮) শুক্রবার রাতে মারা গিয়েছেন আরজিকরে। পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘক্ষণ চিকিৎসা না করে ফেলে রাখা হয়েছিল তাঁকে। গোপালনগরের রীতা কীর্তনিয়াও শুক্রবার রাতে আরজিকরে মারা গিয়েছেন। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে তাঁর রক্তে এনএস-১ পজিটিভ মিলেছিল বলে দাবি। দিন কয়েক আগে তাঁর শাশুড়ি জ্বরে পড়েন। নদিয়ার তাহেরপুরের রিনা দাস (৪১) কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে শুক্রবার মাঝরাতে মারা যান। পরিবারের দাবি, রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে বলে শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল থেকে ‘রেফার’ করা হয়েছিল তাঁকে। যদিও মৃত্যুর শংসাপত্রে তার উল্লেখ নেই।
শুক্রবার টালিগঞ্জের ঝড়োবস্তি এলাকার পূর্ণিমা বিশ্বাস (২৪) জ্বরে মারা যান। অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলা দিন সাতেক বাইপাসের পাশে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। রক্তে এনএস-১ পজিটিভ মিলেছিল। নেতাজিনগরের বাসিন্দা সবিতারানি দে-র (৬২) মৃত্যুও ডেঙ্গিতে। শনিবার বাইপাস সংলগ্ন এক বেসরকারি হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।