নির্মল মাজি
ডেঙ্গি-বিতর্কে এ বার রাজ্য সরকারের ঢাল হয়ে মাঠে নামলেন তৃণমূলের চিকিৎসক-বিধায়ক নির্মল মাজি।
রাজ্যে ডেঙ্গি বাড়ার কারণ হিসেবে সম্প্রতি আদালতে রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, পরিবেশের পরিবর্তনের জন্য ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে। তা ছা়ড়া বাইরে বেড়াতে গিয়ে এ রাজ্যের অনেক মানুষ ডেঙ্গির ভাইরাস শরীরে বহন করে আনছেন।
শনিবার আরও একধাপ এগিয়ে নির্মল বলেন, ‘‘ডেঙ্গি এখানে হচ্ছে না এমন তো কেউ বলছে না। এ রাজ্যে ডেন-১ এবং ডেন-৩ ভাইরাস রয়েছে। আর বাইরে বেড়াতে গিয়ে অনেকে ডেন-২ এবং ডেন-৪- এর ভাইরাস বহন করে আনছেন। সরকারও সেটাই বলতে চেয়েছে।’’ তাঁর এই তথ্যের উৎস কী, তা অবশ্য জানাতে পারেননি শাসক দলের এই চিকিৎসক নেতা।
আরও পড়ুন:বাঙালির পাতে আসছে আমুর মাছ
বিরোধীদের অভিযোগ, ডেঙ্গি মহামারির রূপ নিয়েছে। এই রোগের মোকাবিলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। ডেঙ্গি নিয়ে সঠিক তথ্যও চেপে যাচ্ছে সরকার। নির্মলের পাল্টা দাবি, পঞ্চাশ বছর আগেও এ রাজ্যে ডেঙ্গি হত, এখনও হচ্ছে। এর পরেও ডেঙ্গি নিয়ে রাজ্যে এখন গেল গেল রব তোলা হচ্ছে। এর পিছনে কিছু বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে বলে অভিযোগ নির্মলের। চিকিৎসক-বিধায়কের কথায়, ‘‘মুনাফা লুটতে কিছু স্বার্থান্বেষী কর্পোরেট হাসপাতাল ডেঙ্গি না হলেও রোগীর ডেঙ্গি হয়েছে বলে দিচ্ছে। অযথা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তাতে ভয় পেয়ে অনেকে ভর্তি হয়ে যাচ্ছেন। তার পর বিল মেটাতে রোগীর নাভিশ্বাস উঠছে। এই রকম কিছু রোগী আমাদের মতো অনেককে ধরে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের রক্তপরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ডেঙ্গি নেই!’’ এমন রোগীর সংখ্যা কত? তৃণমূলের বিধায়কের উত্তর, ‘‘অনেক। তবে এখন সংখ্যাটা মনে নেই।’’
নির্মলের এই বক্তব্যের জবাবে একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্তা বলেন, ‘‘বিনা প্রমাণে এই রকম দাবি হাস্যকর। আমরা এখন সরকারের আক্রমণের অন্যতম লক্ষ্য।’’ আর এক বেসরকারি হাসপাতাল-কর্তার কথায়, ‘‘ডেঙ্গি চিকিৎসায় গলদ, কারচুপি থাকলে সব ডেঙ্গি রোগীর চিকিৎসা সরকারি হাসপাতালেই করা হোক।’’
রাজ্য সরকার ৪ অক্টোবরের পর কেন্দ্রকে ডেঙ্গি সংক্রান্ত কোনও তথ্য পাঠায়নি বলে দিল্লি থেকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকারের হয়ে ব্যাট ধরে নির্মল বলেন, ‘‘দিল্লি বিমাতৃসুলভ আচরণ করে। কোনও প্রকল্পে টাকা দেয় না। এদের তথ্য জানিয়ে লাভ নেই।’’ স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ সচিব
তমাল ঘোষের মন্তব্য, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ে সরকার কিছুই করছে না, সব রোগী মারা যাচ্ছে — রাজ্যে এই রকম একটা ভুল প্রচার চলছে।’’