তাণ্ডবের নমুনা।--নিজস্ব চিত্র।
দূর্ঘটনায় জখম এক মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পঞ্চায়েত থেকে অ্যাম্বুল্যান্স না পাওয়ায় পঞ্চায়েতে দফতরে বিক্ষোভ, ভাঙচুর, পথ অবরোধ করল বাসিন্দারা। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে পোলবা পঞ্চায়েতে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গত সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ গ্রামে একটি কীর্তন শুনে বাড়ি ফেরার পথে একটি গাড়ির ধাক্কায় আহত হন চৌতারা গ্রামের এর মহিলা। বাসিন্দারা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন বলে পঞ্চায়েতের কাছে অ্যাম্বুল্যান্স চান। কিন্তু পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ তা দেননি। মহিলাকে অন্য গাড়িতে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অথচ একটি অ্যাম্বুল্যান্স পঞ্চায়েতর দফতরের সামনে দাঁড়িয়েছিল।
ঘটনার প্রতিবাদে এদিন বেলা ১২ট নাগাদ চৌতারা গ্রামের লোকজন পঞ্চায়েতে চড়াও হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। কিছু লোক ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। শুরু হয় দু’পক্ষে হাতাহাতি। সেই সময় পঞ্চায়েত অফিসে বাধর্ক্য ভাতা নিতে বসেছিলেন ৭০ বছরের বৃ্দ্ধা কল্পনা ভূমিচ। তাঁর অভিযোগ, “পঞ্চায়েত প্রধান মমতা মাঝির উপস্থিতিতে জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি কালু রহমান ও পঞ্চায়েতের সদস্য সাহাদাদ আলি আমাকে মারধর করে। বার্ধক্যভাতার কথা বলতেই আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয় কোথায় থাকি। চৌতারা বলতেই দুই নেতা আমাকে ধাক্কা-ধাক্কি করেন। ভয়ে বেরিয়ে আসি।” এ কথা জানতে পেরে বিক্ষোভকারীরা আরও খেপে গিয়ে ভাঙচুর চালায়। পঞ্চায়েতের সমস্ত কর্মীদের ঘরে আটকে রাখে বিক্ষোভকারীরা। স্থানীয় বিধায়ক এলে তাঁকেও ঘেরাও করা হয়। বৃদ্ধাকে মারধরের অভিযোগে কালু ও সাহাদাদকে গ্রেফতারের দাবি ওঠে। ভাঙচুরের পরে পোলবা মহানাদ রাস্তা অবরোধ করা হয়। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত অবরোধ চলে।
গোলমালের সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকলেও জনতাকে সামাল দিতে পারেনি। পরে পোলবা থানা এবং চুঁচুড়া পুলিশ লাইন থেকে বিশাল বাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
যদিও পঞ্চায়েত প্রধান মমতা মাঝি বলেন, “পঞ্চায়েতের কোনও অ্যাম্বুল্যান্স নেই। তাই তা দেওয়ার প্রশ্নও ওঠেনা।” তিনি আরও বলেন, “বৃদ্ধাকে কোনওরকম হেনস্থা করা হয়নি। উত্তেজিত জনতা ইচ্ছা করেই মিথ্যা অভিযোগ এনে এই তাণ্ডব চালায়। স্থানীয় জনকল্যাণ সমিতির অ্যাম্বুল্যান্সটি পঞ্চায়েত অফিসের সামনে থাকায় এলাকার মানুষ সেটি পঞ্চায়েতের ভেবেছিল।”
সাহাদাদ এবং কালু রহমান অবশ্য বলেন, “ওই বৃদ্ধাকে মারধর দূরের কথা কোনওরকম অসন্মান করা হয়নি। শুধু তাঁকে বলা হয়েছিল বিক্ষোভ হচ্ছে, পরে আসবেন।”