এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের দাবিতে বছরের পর বছর ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে আসছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার ১ ব্লকের দক্ষিণ দেয়ারক গ্রামের বাসিন্দারা। অবশেষে শেষ দফা ভোটের দিন কয়েক আগে বিদ্যুৎ সংযোগ এসেছে গ্রামে। এ বার অবশ্য দাবি মেটায় সকলে খুশি মনে ভোট দিতে গিয়েছেন বুথে। অন্য বার ভোট বয়কটের ডাক দিলেও শেষমেশ গাঁয়ের অনেকেই গজগজ করতে করতে বুথমুখো হয়েছেন। এ বার অবশ্য ছবিটা বদলে গিয়েছে।
দক্ষিণ দেয়ারক পঞ্চায়েতের অধীন ওই গ্রামটিতে প্রায় চার হাজার মানুষের বাস। বহু বছর ধরেই গ্রামে রাস্তা, পানীয় জল ও বিদ্যুতের দাবি করে আসছিলেন বাসিন্দারা। ওই গ্রামের আশপাশের গোঠুরা, উত্তর কুলেশ্বর, রাধাবল্লভপুর, চৌষা নৈনান, সব ক’টি গ্রামে অনেক আগেই বিদ্যুৎ এসেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় গ্রামের ছেলেমেয়েদের যেমন পড়াশোনার ক্ষতি হয়েছে, তেমনই ক্ষতি হয়েছে জীবিকারও। গ্রামবাসী আনন্দ হালদার, শ্রীকান্ত সর্দার, সদানন্দ চক্রবর্তীরা জানালেন, বিদ্যুৎ না থাকায় পাম্প চালিয়ে জল সেচের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। বছরের পর বছর পড়ে রয়েছে একটি শ্যালো মেশিন। জল না পেয়ে নষ্ট হয়েছে সব্জি চাষ। বিদ্যুতের অভাবে গ্রামে কুটিরশিল্পও গড়ে ওঠেনি।
গ্রামবাসীদের দাবি, মূলত বিদ্যুতের দাবিতেই গত পঁয়ত্রিশ বছর ধরে আন্দোলন করে আসছেন তাঁরা। প্রতি বার ভোটের আগে ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে আসছেন। প্রতি বারই রাজনৈতিক নেতারা প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি কিছুই। জমেছে আরও ক্ষোভ।
অবশেষে ভোটের আগে বিদ্যুৎ সংযোগ আসায় খুশি শ্রীকান্ত, সদানন্দরা। তাঁদের কথায়, “এই গ্রামের প্রায় দু’শো বাসিন্দা বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন।” স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার বলেন, “২০১৩ সালেই ওই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমোদন পেয়েছিলাম আমরা। কিন্তু কয়েক জনের বাধায় সংযোগ দেওয়া যাচ্ছিল না। সে সব এখন মিটে গিয়েছে।”