উচ্চ মাধ্যমিকে ৭৮%, শিক্ষিকা হতে চায় তৃষা

দশ বছর বয়সে বাবা-মাকে হারিয়ে অথৈ জলে পড়েছিল তৃষা। দেখার কেউ না থাকায় ঘর ছেড়ে তার ঠাঁই হয়েছিল চন্দননগরের একটি হোমে। বাবা-মায়ের হারানো স্নেহ-ভালবাসা অনেকটাই পুষিয়ে দিয়েছেন হোমের লোকজন। তাঁদের ছত্রছায়ায় থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে নজরকাড়া নম্বর পেয়ে পাশ করেছে তৃষা পাল। ওই প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক পরিমল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তৃষা আমাদের মেয়ের মতোই।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০১:১৯
Share:

তৃষা পাল ।

দশ বছর বয়সে বাবা-মাকে হারিয়ে অথৈ জলে পড়েছিল তৃষা। দেখার কেউ না থাকায় ঘর ছেড়ে তার ঠাঁই হয়েছিল চন্দননগরের একটি হোমে। বাবা-মায়ের হারানো স্নেহ-ভালবাসা অনেকটাই পুষিয়ে দিয়েছেন হোমের লোকজন। তাঁদের ছত্রছায়ায় থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে নজরকাড়া নম্বর পেয়ে পাশ করেছে তৃষা পাল। ওই প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক পরিমল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তৃষা আমাদের মেয়ের মতোই।”

Advertisement

বাবা-মায়ের সঙ্গে হাওড়ার থাকত তৃষা। তার যখন ন’বছর বয়স, বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মেয়েকে নিয়ে দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই শুরু করেন মা। কিন্তু সে লড়াইও অচিরেই থমকে যায়। কেননা, এক বছরের মাথার তার মা-ও মারা যান। সেই থেকেই তৃষার স্থান হয় চন্দননগরের হোমটিতে। হোম কর্তৃপক্ষ জানান, এখানে ২৩০ জন আবাসিকের সঙ্গে মেয়েটি বড় হয়েছে। ছোট থেকেই মেয়েটি অত্যন্ত মেধাবী। মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেছিল ৭৩% নম্বর পেয়ে। উচ্চ মাধ্যমিকে সেই হিসেবও টপকে ৭৮% নম্বর পেয়েছে হোমের ১১ নম্বর ঘরের আবাসিক তৃষা। ভুগোল, সংস্কৃত এবং দর্শনে ‘লেটার’ পেয়েছে। হোমের পক্ষ থেকে তৃষার জন্য দু’জন গৃহশিক্ষক রাখা হয়েছিল। তৃষা ছাড়াও হোমের আরও এক আবাসিক সুমিতা হালদার এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। সে-ও পাশ করেছে। জোড়া সাফল্যে হোমের অন্য আবাসিকরাও যারপরনাই খুশি। তৃষার এই কসংগ্রাম অন্যদের অনুপ্রেরণা জোগাবে, এমনটাই আশা হোমের কর্মকর্তাদের। যাবতীয় বাধাকে হারিয়ে মাধ্যমিকের পরে দ্বিতীয় ‘হার্ডল’ টপকানো তৃষার ইচ্ছা শিক্ষকতা করা। তাঁর কথায়, “হোমের সকলে খুব ভাল। আমার সাফল্যের ওঁরাও সমান ভাগীদার। কিন্তু তার বাইরে প্রতি পদে সমস্যায় পড়েছি। সাহায্য পাইনি। প্রতিকুল পরিস্থিতে কোনও ছেলেমেয়ের পড়াশোনা যাতে বন্ধ না হয়, ভবিষ্যতে শিক্ষিকা হয়ে সেই চেষ্টা করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন