ধৃতিমান সরকার।
সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ৫৩৭ স্থান দখল করলেন বসিরহাটের সংগ্রামপুর গ্রামের ছাত্র ধৃতিমান সরকার। শুক্রবার সকালে ২০১৩ সালের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার ইন্টারনেটে ফল প্রকাশের পরে পুরনো ছাত্রের এই সাফল্যের খবর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা বসিরহাট হাইস্কুলের শিক্ষকেরা। দুপুরেই তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তাঁরা।
বসিরহাটের সংগ্রামপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা ধৃতিমানের বাবা পেশায় আইসিডিএস কর্মী। মা মিঠুদেবী গৃহবধূ। ছোট্ট একতলা বাড়িতে এক মাত্র সন্তান ধৃতিমানকে নিয়ে তাঁদের সংসার। ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি গভীর আগ্রহ ধৃতিমানের। বসিরহাট হাইস্কুলের ওই ছাত্র ২০০৭ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাতটি বিষয়ে লেটার নিয়ে ৭৩৩ নম্বর পেয়েছিল। উচ্চমাধ্যমিকে অঙ্ক, ইংরাজি, রসায়ন এবং পদার্থবিজ্ঞানেও লেটার ছিল তার। মোট প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৪০৯।
ক্ল্যাসিকাল রক সঙ্গীতের ভক্ত এই যুবক সুযোগ পেলেই বসে পড়েন গিটার নিয়ে। জানালেন, দিনে ৮-১০ ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন।
বিশ্বকাপ শুরু হতেই ম্যাচ দেখার জন্য আগ্রহ তাঁর তুঙ্গে। স্পেনের খেলা হলে তো কথাই নেই! অনন্তবাবুর কথায়, “ছেলেটা দেশের মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ পাওয়ায় আমরা খুব খুশি।” মা মিঠুদেবী বললেন, “ছোট থেকেই দেখছি, পড়াশোনা, খেলাধুলো যখন যা করে, মন দিয়ে করে।
এ দিন স্কুলের শিক্ষকদের জন্য মিষ্টি নিয়ে সংবর্ধনা নিতে আসেন শান্ত যুবকটি। প্রধান শিক্ষক স্বপন রায় বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও ছাত্র সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় স্থান পেল। আমরা সকলে ওর জন্য গর্বিত। বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করেও যে সর্বভারতীয় পরীক্ষায় সাফল্য পাওয়া যায়, তা দেখিয়ে দিয়েছে ও। অন্যান্য পড়ুয়াদের কাছে ও দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’’
ধৃতিমানের কথায়, “ভাল ফল করতে গেলে আগে আগে একটা স্পষ্ট পরিকল্পনা থাকা জরুরি। সে যে ক্ষেত্রেই হোক না কেন। দৃঢ় মানসিকতা না থাকলে জীবনের কোনও ক্ষেত্রেই সফল হওয়া সম্ভব না।’’ ধৃতিমান বলেন, “দেশের মানুষের জন্য কাজ করার একটা বড় সুযোগ এসেছে। তার মর্যাদা রাখাই আমার প্রথম লক্ষ্য। সুযোগ পেলে এলাকার উন্নয়নের জন্যও কাজ করতে চাই।”