খানাখন্দে ভরা ঘোষপাড়া রোড, যানজট, দুর্ঘটনায় জেরবার মানুষ

রাস্তা আছে। কিন্তু তা চলাচলের অযোগ্য। পিচ উঠে গর্ত বেরিয়ে গিয়েছে। ব্যারাকপুর থেকে কাঁচরাপাড়া পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তায় অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। কোথাও কোথাও আবার বিদ্যুতের তার, টেলিফোনের তার বা পাইপ লাইন বসাতে রাস্তা খুঁড়ে পাশে মাটি ডাঁই করা আছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৪ ০১:৫৯
Share:

এই হাল হয়েছে রাস্তার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।

রাস্তা আছে। কিন্তু তা চলাচলের অযোগ্য। পিচ উঠে গর্ত বেরিয়ে গিয়েছে। ব্যারাকপুর থেকে কাঁচরাপাড়া পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তায় অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। কোথাও কোথাও আবার বিদ্যুতের তার, টেলিফোনের তার বা পাইপ লাইন বসাতে রাস্তা খুঁড়ে পাশে মাটি ডাঁই করা আছে। গাড়ি চালানো তো পরের কথা, রাস্তা এতটাই বেহাল, যে দিনের বেলায় সাইকেল চালাতেও বুক কাঁপে এলাকার মানুষজনের।

Advertisement

রাস্তাটির নাম ঘোষপাড়া রোড। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের অন্যতম পুরনো এই রাস্তায় প্রতিদিন কয়েক হাজার গাড়ি চলে। পাঁচটি রুটের বাস চলে। গঙ্গার ধার বরাবর এই রাস্তার দু’ধারে কল-কারখানা থাকায় মাল-বোঝাই ট্রাক ও লরিও চলাচল করে। ঘন জন বসতির মধ্যে দিয়ে যাওয়া এই রাস্তার দু’ধারে অসংখ্য দোকানপাট, বাজার থাকায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় উপচে পড়ে। তা ছাড়া, কারখানাগুলিতেও শিফ্ট শেষে বা শুরুর সময়ে ভয়ানক যানজট হয়। এর মধ্যে রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় গোদের উপর বিষফোঁড়ার দশা। বেহাল রাস্তা নিয়ে মাস কয়েক আগে কংগ্রেসের তরফ থেকে বিক্ষোভও দেখানো হয়। নানা সময়ে বিভিন্ন দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় মানুষও বিক্ষোভ দেখান। রাস্তা সারানোর দাবি ওঠে। হয় তো সামান্য প্যাচ ওয়ার্ক বা তাপ্পি মারার কাজ হয়। তারপরে ক’দিন যেতে না যেতেই পরিস্থিতি আবার আগের মতোই।

ঘোষপাড়া রোডে সব থেকে বেশি যানজট হয় ইছাপুর, কাঁকিনাড়া, ভাটপাড়া এবং নৈহাটি স্টেশনের কাছে। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘ঘোষপাড়া রোডে গাড়ির চাপ বেশি থাকে বলে রাস্তা বেহাল হয়। পূর্তমন্ত্রীকে জানিয়েছি। উনি দেখছেন।’’ ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য পূর্ত দফতরকে বলেছি। অবিলম্বে কাজ শুরুর কথা।’’

Advertisement

পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র ৬ মিটার চওড়া এই রাস্তায় ইছাপুর, শ্যামনগর, জগদ্দল ও নৈহাটিতে বড় বাজার বসায় যান চলাচলে অসুবিধা হয়। শুধু তাই নয়, রাস্তা সারানোর ক্ষেত্রেও সাত-পাঁচ ভাবতে হয়। রাস্তাটি দু’পাশের জমি থেকে নিচু হওয়ায় বাজার ও রাস্তার দু’পাশের জল এসে রাস্তায় জমে। পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের ক্ষোভ, ‘‘সব জল রাস্তায় এসে জমা হওয়ায় ঘোষপাড়া রোড খারাপ হয়েছে। তার উপর প্রতিনিয়ত গাড়ির চাপ আছে। পুরসভা ও সিইএসসি মাঝেমাঝে রাস্তা খুঁড়ে ফেলে। তারপরে আমাদের সারাতে হয়।’’ নিকাশি ঠিক না হলে রাস্তার হাল পাকাপাকি ভাবে ফেরানো মুশকিল বলেও জানান অনেকে।

ক্ষোভ-বিক্ষোভ যাই হোক, ভোগান্তি সাধারণ মানুষের। ইছাপুরের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক আনন্দ সরকার বলেন, ‘‘সারা বছর রাস্তার ধারে বাজার বসে। বাজার ক্রমশ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। যানবাহন বাড়ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনা।” স্থানীয় মানুষ জানালেন, ভাঙা রাস্তায় গাড়ি গেলেই ধুলো উড়ছে প্রবল ভাবে। আশপাশের দোকানপান চালাতে সমস্যা হচ্ছে। বাসিন্দাদেরও হাল খারাপ। বছরের পর বছর এই পরিস্থিতি চললেও হাল ফেরার কোনও লক্ষণ নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন