গোবরডাঙায় নাবালিকার বিয়ে আটকাল পুলিশ

বিয়ের আয়োজন সম্পূর্ণ। আসতে শুরু করেছেন নিমন্ত্রিতেরাও। বিয়ের আনন্দে সকলেই মেতে উঠেছেন। এমন সময়েই ঘটল ছন্দপতন। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কয়েকজন প্রতিনিধিদের নিয়ে ছাদনাতলায় হাজির হল পুলিশ। নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দেওয়ার অপরাধে বিয়ে বন্ধ করে দিল তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোবরডাঙা  শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৪ ০১:২১
Share:

বিয়ের আয়োজন সম্পূর্ণ। আসতে শুরু করেছেন নিমন্ত্রিতেরাও। বিয়ের আনন্দে সকলেই মেতে উঠেছেন। এমন সময়েই ঘটল ছন্দপতন। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কয়েকজন প্রতিনিধিদের নিয়ে ছাদনাতলায় হাজির হল পুলিশ। নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দেওয়ার অপরাধে বিয়ে বন্ধ করে দিল তারা। বুধবার সন্ধ্যায় উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা থানার নকপুল এলাকার ঘটনা। পরে পুলিশের কাছে নাবালিকার বাবা মুচলেকা দিয়ে জানিয়েছেন, মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তার বিয়ে দেবেন না তিনি। অন্যথায় আইনে যে শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে তা মেনে নেবেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ‘চাইন্ড লাইন’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দফতরের হেল্প লাইনে কয়েকজন ফোন করে জানান হাবরার নকপুলে এক নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিয়ে হওয়ার কথা বুধবার রাতে। সংস্থার তরফে হিরণ্ময় বিশ্বাস বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ওই নাবালিকা যে স্কুলে পড়ে সেখানে গিয়ে তার বয়সের প্রমাণপত্র সংগ্রহ করি। তার পর হাবরা থানায় অভিযোদ দায়ের করা হয়।” হাবরা থানা থেকে তাঁদের গোবরডাঙা ফাঁড়িতে পাঠানো হয়। ফাঁড়ির ওসি সিদ্ধার্থ ঘোষ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা বুধবার সন্ধ্যায় নাবালিকার বাড়িতে গিয়ে হাজির হন। সেখানে তখন ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন চলছে। এসে গিয়েছেন নিমন্ত্রিতেরাও। নাবালিকার বাবাকে ডেকে ওসি বলেন, “ মেয়ের বয়স ১৫ হওয়া সত্ত্বেও আপনি তার বিয়ে দেওয়াটা কি ঠিক কাজ বলে মনে করছেন। ও তো লেখাপড়া করছে। আপনিও তো লেখাপড়া করা মানুষ।

কী করে এমন কাজ করছেন?” ওসি তাঁকে বোঝানোর পরে মেয়ের বিয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন নাবালিকার বাবা। এমনকী প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবেন না বলেও পুলিশের কাছে মুচলেকা দেন।

Advertisement

আইনত নিষিদ্ধ জেনেও কেন নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিচ্ছিলেন? উত্তরে একটি বেসরকারি সংস্থার ওই কর্মী জানান, পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ। এই অবস্থায় ভাল পাত্র পেয়ে যান। পাত্রের মাছের ব্যবসা রয়েছে। হাবরায় বাড়ি। তাই মেয়ের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

আর কী বলছে ওই নাবালিকা? স্থানীয় ভূদেব স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ওই নাবালিকা এ দিন বলে, “বাবা-মা কষ্ট করে পড়াচ্ছিল। সংসারে টানাটানি রয়েছে। আমিও অন্যের বাড়িতে কাজ করি। বাবা-মা’র কষ্টের কথা ভেবে স্বেচ্ছায় বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম।”

ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই নাবালিকা পড়তে চাইলে তার যাবতীয় দায়িত্ব তারা বহন করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন