হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জখম বন্দিদের। ছবি: তাপস ঘোষ।
তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে দু’দল বন্দির মধ্যে মারামারির জেরে মঙ্গলবার তুলকালাম হল হুগলি জেলে। বাঁশ, ইট-পাটকেল নিয়ে মারপিটে দু’পক্ষের ছ’জন জখম হয়। চার জনের মাথা ফাটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খায় পুলিশ। ছ’জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। ঘটনার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হুগলির জেলাশাসক মনমীত নন্দা।
বছর খানেক আগেও ওই জেলে দু’দল বন্দির মধ্যে মারামারি হয়। ওই ঘটনায় চার জন আহত হয়েছিল। সম্প্রতি আদালত থেকে জেলে নিয়ে আসার সময় পুলিশের চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে, তাঁদের ব্লেডের আঘাত করে ছয় দুষ্কৃতী পালিয়ে যায়। পরে অবশ্য পাঁচ জন ধরাও পড়ে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল থেকেই ওই জেলে দু’দল কয়েদির মধ্যে বচসা বাধে। এক দিকে শ্রীরামপুর শিল্পাঞ্চলে কুখ্যাত দুষ্কৃতী নেপু এবং চিকুয়ার দলবল। অন্যদিকে, চুঁচুড়া-মগরা এলাকার কিছু দুষ্কৃতী। দুপুরে গোলমাল বড় আকার নেয়। জেলের ভিতরে থাকা বাঁশ, লাঠি, ইট নিয়ে একে অন্যের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জেলে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা ছুটে আসেন। তবে তাঁরা রক্তারক্তি ঠেকাতে পারেননি। পরে খবর পেয়ে চুঁচুড়া থানা থেকে বিশাল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে অবস্থা আয়ত্তে আনে। আহত ছয় বন্দিকে ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ছ’জনই বেশ চোট পেয়েছে। পুলিশি পাহারায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, আহতদের নাম সোনাই বিশ্বাস, রবি দাস ওরফে চিকনা, শেখ সামিরুদ্দিন ওরফে গলাকাটা রাজু, শেখ নুর আলিমুদ্দিন, শেখ আলতাব এবং অসীম কাহার ওরফে সানিয়া। পুলিশ সূত্র অনুযায়ী, দাগি দুষ্কৃতী অসীম নেপু-চিকুয়ার সাগরেদ। বাকিরা অন্য পক্ষের। হাসপাতালে এসে অন্য বন্দিদের কেউ কেউ অভিযোগ করে, নেপু-চিকুয়া জেলের ভিতরে মৌরসিপাট্টা চালায়। তাদের কথায় অন্য বন্দিদের ওঠবোস করতে হয়।
জখম এক বন্দির কথায়, “রিষড়া-কোন্নগরের কিছু দাগি আসামী জেলে মোবাইল ব্যবহার করে। পয়সা দিয়ে বাইরে থেকে ভাল খাবার-দাবার আনায়। ওরা আমাদের কাছে টাকা চায়। দিতে না পারলেই মারে। আমরা ওদের আচরণের প্রতিবাদ করায় ওরা ইট, বাঁশ নিয়ে আমাদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জেলের পুলিশ থামাতে এলে, তাদের দিকেও ধেয়ে যায়।” এ ব্যাপারে জেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।