নিহত দুষ্কৃতী। নিজস্ব চিত্র
পয়লা বৈশাখে রক্তমাখা সকাল দেখল চুঁচুড়া। গুলি করা হল এক যুবককে। জবাবে, আততায়ীদের এক জনকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে গুলি করে মারল গুলিতে আহতের ভাইয়ের ‘গ্যাং’।
হুগলির পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে আমাদের অনুমান, দুষ্কৃতীদের দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরেই এই পরিণতি। প্রথমে যে যুবকটিকে গুলি করা হয়েছিল, সেই সঞ্জিত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে একাধিক খুন, তোলাবাজির অভিযোগ আছে। ওর ভাই টোটন বিশ্বাসও পুরনো দুষ্কৃতী। সঞ্জিতকে মারতে এসে যে যুবকটিকে খুন হয়েছে, তার পরিচয় জানা যায়নি।”
গত কয়েক মাসে সমাজবিরোধীদের সংঘর্ষে তিনটি খুন হয়েছে চুঁচুড়া এলাকায়। পুলিশ সুপার জানান, জেলা পুলিশের একাধিক দল দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ চুঁচুড়ার মিলন সিনেমা এলাকায় নির্মীয়মাণ একটি আবাসনের পিছনে একটি দোকানে এসেছিল বছর চল্লিশের সঞ্জিত। সম্প্রতি সে প্রমোটিংয়ের ব্যবসা শুরু করে। ওই দোকানে দাঁড়িয়ে সে যখন পুজোর প্রসাদ মুখে তুলছে, তখন একটি মোটরবাইক নিয়ে সেখানে দুই যুবক। সঞ্জিতের পাশে দাঁড়ায় আর এক জন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পাশে দাঁড়ানো যুবক ওয়ান শটার থেকে গুলি চালায়। বুকের বাঁ দিকে গুলি লাগতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সঞ্জিত। আততায়ীরা মোটরবাইকে চেপে এলাকা ছেড়ে পালাতে চেষ্টা করে। পুলিশ সূত্রের খবর, সঞ্জিতকে গুলি করা হয়েছে খবর পেয়েই ধারেকাছে থাকা টোটন নিজের দলের ছেলেদের নিয়ে সেখানে চলে আসে। টেনেহিঁচড়ে মোটরবাইক থেকে নামানো হয় এক জনকে। বাঁশ-লাঠি দিয়ে শুরু হয় গণপিটুনি। মারধরে জখম হয়ে প্রায় নেতিয়ে পড়েছিল বছর পঁয়ত্রিশের ওই যুবক। তাকে পর-পর দু’টি গুলি করে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় টোটনের দলবল। ঘটনাস্থলেই মারা যায় যুবকটি। জখম সঞ্জিতকে পাঠানো হয় কলকাতার একটি নার্সিংহোমে।
সকালের ওই কাণ্ডের জেরে এ দিন পয়লা বৈশাখের উৎসব থাকলেও আতঙ্কে দোকানই খোলেননি অধিকাংশ ব্যবসায়ী। এলাকায় দুষ্কৃতীদের উপদ্রব ক্রমশ বাড়ছে বলে ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকার করলেও সংবাদমাধ্যমের কাছে এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি স্থানীয় বাসিন্দারা।