রোজ সকালে লাইন পুরসভার জলের জন্য। ছবি: তাপস ঘোষ।
গরম পড়তেই জলসঙ্কট দেখা দিয়েছে চুঁচুড়ার বেশ কিছু এলাকায়। বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসা পুরসভার জলের গাড়ি। পুকুরের জলও ব্যবহার করতে বাধ্য হন অনেকে। কিন্তু তাতে আবার নানা রকম পেটের সমস্যা দেখা দেয়।
হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ১৭ ও ২২ নম্বর ওর্য়াডের বেশ কিছু এলাকা জুড়ে কয়েক মাস ধরেই এই পরিস্থিতি চলছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাদের এই দুর্ভোগের কথা পুরসভাকে জানিয়ে কোনও কাজ হয়নি। চৈত্রের প্রখর গরম পড়তে সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাজিপল্লি, বন্দ্যোপাধ্যায় লেন, মুখোপাধ্যায় গলি, সেগুন বাগান, মহিষমর্দিনীতলা, মহাত্মা গাঁধী রোডের একাংশ, খাদিনামোড় এবং ২২ নম্বর ওয়ার্ডের আলোছায়া গলি ও প্রতাপগড়ের কিছু এলাকা জুড়ে চলছে জলের সমস্যা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ এই সব এলাকার একমাত্র পাম্পটি দীর্ঘদিন ধরে খারাপ। অনেক দিনের পুরনো হওয়ার ফলেই সেটি ঠিক মতো কাজ করছে না। পুরসভার পক্ষ থেকে অনেক বার সারানো হয়েছিল। কিন্তু কিছু দিন ঠিক মতো চললেও পাম্প ফের খারাপ হয়ে যায়।
জলের সমস্যা মেটাতে পুরসভা কিছু কিছু এলাকায় জলের গাড়ি পাঠালেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয় বলে জানালেন বাসিন্দারা। রাস্তায় যে কলগুলি রয়েছে, সেগুলির অধিকাংশতেও জল পড়ে না। বহু মানুষ সকালের দিকে গঙ্গা থেকে স্নান সেরে আসেন। মুখোপাধ্যায় গলির বাসিন্দা অম্বিকা মুখোপাধ্যায় বলেন, “বেশ কয়েক মাস ধরে আমাদের এলাকায় জল নেই। পাম্পটি বহু দিনের পুরানো হওয়ায় এই অবস্থা বার বার হচ্ছে। শীতকালে অসুবিধা সে রকম না হলেও গরমে জলের হাহাকার দেখা দেয়। পুরসভার কাছে বহুবার দরবার করেও কোনও কাজ হচ্ছে না।” ধরমপুর বন্দ্যোপাধ্যায় লেনের বাসিন্দা চন্দন ঘোষ বলেন, “এই প্রখর গরমের দিনে জলের জন্য চাহিদা বাড়ে। কিন্তু জল পাই না ঠিক মতো।” তাঁর আরও বক্তব্য, পুরসভার জলের ট্যাঙ্ক থেকে জল আনার সময়ে ভিড়ের মধ্যে বচসা বাধে। এ ভাবে জলের জন্য পাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়। গৃহবধূ স্বস্তিকা ঘোষ জানালেন, পুরসভার দেওয়া জলে কোনও রকমে রান্নার কাজটা সারে যাচ্ছে। কিন্তু স্নান এবং অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রে খুবই অসুবিধা বাড়ির পুরুষ সদস্যেরা অনেকে স্নানের জন্য গঙ্গায় গেলেও মহিলাদের ক্ষেত্রে তা রোজ সম্ভব নয়।
হুগলি-চুঁচুড়ার পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, “মহিষমর্দিনীতলার পাম্পটি দীর্ঘ দিনের পুরনো হওয়ায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সেগুনবাগান এবং মহাত্মাগাঁধী রোডের বুনোকালীতলার কাছে দু’টি নতুন পাম্প বসানোর কাজ জোর কদমে চলছে। এই পাম্প দু’টি চালু হয়ে গেলে তারপরেই ১৭ ও ২২ নং ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জলসঙ্কট দূর হবে।”