টিটাগড় বাজারে রঙের পসরা।—নিজস্ব চিত্র।
বসন্ত উত্সবে যাতে কালো দাগ না লাগে তাই এ বার অতি সতর্ক ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। দোলের দিন যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য শনিবার থেকেই সাদা পোশাকের বিশেষ বাহিনীকে রাস্তায় নামানো হল। এই টহলদার বাহিনী শুধু গণ্ডগোল বা অশান্তির উপরই নজর রাখবে না, খারাপ রঙ বিক্রি হচ্ছে কি না, সে দিকেও খেয়াল রাখবে বলে শনিবারই সাংবাদিকদের জানান কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান সি সুধাকর।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন প্রদেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করেন। এখানে রং খেলায় উচ্ছ্বাসের মাত্রাটাও বেশি। কারখানার কুলিলাইনগুলিতে রীতিমতো নর্দমার পাঁক ছোড়াছুড়ি হয়। বাঁদুরে রঙ বা আঠালো রঙের ব্যবহারও হয়। পথচলতি লোকজন, এমনকী, সরকারি গাড়িও বাদ যায় না রঙের অত্যাচার থেকে। দোলের তিন-চার দিন আগে থেকে রং খেলা শুরু হয়ে যায়। চলে দোলেরও একদিন পর পর্যন্ত। বিশেষত, দোলের আগের দিন থেকেই মদের দোকানগুলিতেও লম্বা লাইন পড়ে যায়। সেখানেও নজর রাখার কথা জানিয়েছেন গোয়েন্দাপ্রধান। দোলের সময় ইভটিজিং রুখতে পুলিশের এই বিশেষ বাহিনীতে কম বয়সী এবং দেখতে ভাল, এমন মহিলা পুলিশকর্মীদেরও রাখা হয়েছে। নেশাগ্রস্ত বা রোমিওদের উপর নজরদারি করতেই নজরকাড়া পোশাকে তাঁরা রাস্তায় থাকবেন। সকাল থেকে দোলের দিন এ হেন পুলিশি ব্যবস্থা ব্যারাকপুরে জেলা পুলিশের আওতায় থাকাকালীনও নেওয়া হয়েছিল। তাতে কাজও দিয়েছিল। তাই পুরনো পন্থাকে কাজে লাগিয়েই শান্তি বজায় রাখতে চাইছে কমিশনারেট।
রঙের দোকানগুলিতে অবশ্য নজরদারি চালানো হয়েছে শুক্রবারও। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে সর্বত্রই এ বার মিলছে ভেষজ রং। দামটা অবশ্যই বেশি। তবে, সামনে ভেষজ রঙের প্যাকেট থাকলেও বিশ্বস্ত কেউ খোঁজ করলেই দোকানদার হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে ভয়ঙ্কর সব রঙের প্যাকেট। কোনওটা সাবান দিয়ে ঘষেও সাত দিনের আগে উঠবে না, আবার কোনওটা এমন রং যে যতবার জল লাগবে তত বার গা থেকে রং বেরোবে।
এই রঙগুলির খোঁজেও তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। গোয়েন্দা প্রধানের দাবি, ‘‘আমরা কোনও ভাবেই বসন্ত উত্সবকে কালিমালিপ্ত হতে দেব না। দোল আনন্দের উত্সব। সবাইকে আনন্দে রাখতেই আমাদের বিশেষ বাহিনী সকাল থেকে পথে থাকছে।’’