নিজেদের ঘর থেকে উদ্ধার হল এক দম্পতির মৃতদেহ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের একমাত্র মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে পানিহাটির এইচ বি টাউনে।
পুলিশ জানায়, ওই দম্পতির নাম সুজন দত্ত (৫৯) ও মুক্তি দত্ত (৫৫)। সুজনবাবু জীবন বিমার কর্মী ছিলেন। এইচ বি টাউনে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন তাঁরা। এ দিন সকালে খবরের কাগজওয়ালা এসে দেখেন, সুজনবাবুদের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। বুধবারের কাগজটিও বাইরে পড়ে আছে। সন্দেহ হওয়ায় বাড়িওয়ালাকে ডাকেন তিনি।
বাড়ির মালকিন স্বপ্না চক্রবর্তী বলেন, “দরজায় বার বার ধাক্কা দিতে সোমা নেশাগ্রস্তের মতো মুখ বাড়িয়ে বলে, ‘বাবা ঘুমোচ্ছে, মা বাথরুমে। আধ ঘণ্টা পরে আসুন।’ ও কখনও এ ভাবে কথা বলে না। সন্দেহ হওয়ায় প্রতিবেশীদের ডাকি।” প্রতিবেশীদের থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ঘোলা থানার অফিসারেরা। দরজা ভেঙে ঢুকে পুলিশ সুজনবাবুর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। বিছানায় পড়ে ছিল মুক্তিদেবীর দেহ। সোমার ঘরের সিলিংয়েও ওড়নার ফাঁস ঝুলছিল। সোমার গলায় ফাঁসের চিহ্ন মিলেছে বলে জানায় পুলিশ।
ঘটনাস্থল থেকে সুইসাইড নোট পেয়েছে পুলিশ। ব্যারাকপুরের গোয়েন্দা প্রধান সি সুধাকর বলেন, “দেনার কারণেই ওই দম্পতি ও তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন বলে মনে হচ্ছে। সুইসাইড নোটেও তার উল্লেখ আছে। মেয়েটি সুস্থ হলে তাঁর বক্তব্য শোনা হবে।”
তবে সুজনবাবুর যে অনেক দেনা হয়েছিল, তা জানিয়েছেন স্বপ্নাদেবীও। তিনি বলেন, “বুধবার সন্ধ্যায় বারাসত থেকে এক ব্যক্তি এসে সুজনবাবুর খোঁজ করছিলেন। কিন্তু ডেকে সাড়া না পাওয়ায় চলে যান। তখনও বুঝিনি এমন কাণ্ড ঘটে গিয়েছে। তবে আমাদের নজরে কখনও অস্বাভাবিক কিছু পড়েনি।” চিকিৎসকদের অনুমান, কড়া ঘুমের ওষুধ জাতীয় কিছ খেয়ে গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সুজনবাবুর মেয়ে সোমা। দম্পতির মৃতদেহ ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ।