নেতারা কোথায়, ক্যানিংয়ে কর্মীদের প্রশ্নের মুখে অধীর

বিরোধীদের হাতে আক্রান্ত হলে বিজেপি কর্মীরা পাশে পাচ্ছেন রাজ্য নেতৃত্বকে। কখনও বা দিল্লি থেকে উড়ে আসছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু ‘আমাদের নেতারা কোথায় গেলেন?’ প্রশ্নটা উড়ে এল ক্যানিংয়ে কংগ্রেসের কর্মীসভায়। মঞ্চে তখন প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী। ক্যানিংয়ের বিভিন্ন ব্লক এবং লাগোয়া বেশ কয়েকটি মহকুমা থেকে বেশ কিছু কর্মীর ভিড়ে ক্যানিংয়ের বন্ধু মহল প্রেক্ষাগৃহ তখন উপচে পড়ছে। দলের ভরাডুবির পরে কর্মীদের ওই উৎসাহ দেখে খানিক আগে অধীর নিজেই বাহবা দিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৪ ০২:৪৬
Share:

বিরোধীদের হাতে আক্রান্ত হলে বিজেপি কর্মীরা পাশে পাচ্ছেন রাজ্য নেতৃত্বকে। কখনও বা দিল্লি থেকে উড়ে আসছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু ‘আমাদের নেতারা কোথায় গেলেন?’

Advertisement

প্রশ্নটা উড়ে এল ক্যানিংয়ে কংগ্রেসের কর্মীসভায়। মঞ্চে তখন প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী।

ক্যানিংয়ের বিভিন্ন ব্লক এবং লাগোয়া বেশ কয়েকটি মহকুমা থেকে বেশ কিছু কর্মীর ভিড়ে ক্যানিংয়ের বন্ধু মহল প্রেক্ষাগৃহ তখন উপচে পড়ছে। দলের ভরাডুবির পরে কর্মীদের ওই উৎসাহ দেখে খানিক আগে অধীর নিজেই বাহবা দিয়েছিলেন। এ বার তাঁকে তাক করেই উড়ে এল প্রশ্ন। ক্যানিংয়ের গোপাল কুণ্ডুর অভিযোগ, “২০১০ সালে ক্যানিংয়ে দলের মহিলা সংগঠনের একটি পার্টি অফিস তৃণমূল ভেঙে দিয়েছিল। জেলার কোনও নেতাই আসেননি। তার পর থেকে দলের ওই অফিস বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। কেন এলেন না আপনারা?” চাঁচাছোলা প্রশ্নটা শুনে কিঞ্চিৎ সময় নেন অধীর। তারপর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলেন, “সে সময়ে তো আমি শুধু মুর্শিদাবাদেই দল করতাম, এখানে কী হয়েছে জানার কথা নয়। তবে কথা দিচ্ছি এ বার আর আপনাদের একলা পড়ে পড়ে মার খেতে হবে না।”

Advertisement

তবে এর পরেও এমন প্রশ্নের বিরাম ছিল না। সন্দেশখালিতে বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণের পরে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঘটনাস্থলে ঘুরে গেলেও কংগ্রেসের প্রদেশ নেতারাও এখানে আসেন না কেন? ক্যানিং ২ ব্লকের মোফিজুদ্দিন মোল্লার অভিমান, “দলের প্রতি মানুষের বিশ্বাস হারিয়েছে।

কংগ্রেস কর্মীরা মার খেলে দলীয় নেতারা তাদের পাশে দাঁড়ালে সেই বিশ্বাস ফিরে আসতে পারে। কিন্তু তাঁরা আসছেন কোথায়!”

অধীর এ বার দলীয় কর্মীদের পরামর্শ দেন, “এক জোট হোন। সকলে মিলে থানায় যান অভিযোগ করুন। থানা অভিযোগ না নিলে জেলা নেতৃত্বকে জানান। আমাকেও জানান।” কর্মীদের ভরসা দেন তিনি, “আমি জানি প্রদেশ নেতারা সময়মতো আপনাদের পাশে দাঁড়াতে পারেননি। তবে এ বার আমি আছি। আমার ভরসা আপনারাই। মনে রাখবেন, কংগ্রেসের এক এক জন কমী একাই একশো।”

রাজপুর-সোনারপুরের ফণীভূষণ নস্করের অভিযোগ ছিল, “দলে কর্মী ও নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে দাদা। সে কারণেই কেন্দ্রে দশ বছর ক্ষমতায় থাকার পরেও রাজ্যে তৃতীয় শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি।”

অধীরের শলা, “মানছি। তবে আসা করব এ বার সেই হারানো সমন্বয় ফিরে আসবে।” ওই কর্মীর প্রশ্নের মধ্যেই ছিল দলের একাংশের তৃণমূলের দিকে পা বাড়িয়ে থাকার প্রবণতা। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে অধীর বলেন, “মনে রাখবেন, কে কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে সব খবর আছে। যাঁরা তৃণমূলে যেতে চান চলে যান। দু নৌকায় পা দিয়ে চললে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।” তিনি বলেন, “আমি একটি বুথ থেকে একশো জন কর্মী চাই না। আমি ৫০টি বুথ থেকে ৫০টা লোক চাই যারা সততার সঙ্গে রাজনীতি করবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন