এ ভাবেই বসবাস। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
পানিহাটির ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরাম নগর, পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দারা এ বারও ভোট দিতে গেলেন এক হাঁটু জল পেরিয়ে। ‘জলাতঙ্কে’র দুঃস্বপ্ন নিয়েই প্রতি দিন বেঁচে থাকার লড়াইটাই অভ্যাস হয়ে গিয়েছে এই এলাকার বাসিন্দাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা স্বপ্না দাস, অশোক রায়রা জানান, বছরভর নোংরা জলের মধ্যে এই নরক বাস করতে হয়। বার বার প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই মেলে না। হোগলার জঙ্গলের মধ্যে ঘর। বাঁশের নড়বড়ে একটা সাঁকো দিয়ে চলাচল। পা ফসকালেই বিপদ। বর্ষাকালে সাপের উপদ্রবের জন্য বেড়ার ঘরের চার কোণে থাকে কার্বলিক অ্যাসিডের শিশি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, পুরসভার জন্মলগ্ন থেকে এই অঞ্চলগুলি আছে। নিয়ম মেনে বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়। পুরসভার নকসায় এই এলাকার মধ্যে দিয়ে ১২ফুট চওড়া রাস্তার কথা বলা আছে। সেই রাস্তার কিছুটা কয়েক বছর আগে কংক্রিটের হয়েছে। কিন্তু বিরাট অংশ এখনও দুর্গন্ধময় নোংরা জলের তলায়। পানিহাটি এমনিতেই নিচু এলাকা। একটু বৃষ্টিতেই জল জমে। সেই জল নামতেই চায় না। জল জমে গোটা এলাকাটি কার্যত জলাজমিতে পরিণত হয়েছে।
জলার মধ্যে গজিয়ে ওঠা ঘাসের জঙ্গলের মধ্যে দু’টি বাঁশ পাশাপাশি রেখে তৈরি করা সাঁকো দিয়ে যাতায়াত চলে। নিজেদের খরচে বাসিন্দারা এই সাঁকো বানিয়েছেন। এক বর্ষার বেশি সেগুলি টেঁকে না। তখন নোংরা জল পেরিয়েই চলে যাতায়াত। বাসিন্দারা পুর-কর দেন। তবুও সারা বছরই নোংরা জল মাড়িয়েই বাড়িতে ঢুকতে হয় বলে অভিযোগ তাঁদের। এই গরমে ক্ষুদিরাম নগর, পূর্বাঞ্চল-সহ পানিহাটি জুড়ে জন্ডিস আর ডায়েরিয়ার সংক্রমণ শুরু হয়েছে। নিকাশির অভাবে এই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলেও অভিযোগ। পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেন, “উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা দলমত নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতা চাইছি। ওই এলাকার উন্নয়নে আমাদের সরকারের নজর আছে।”