বিয়ের গয়না নিয়ে পালাল দুষ্কৃতী

মেয়ের বিয়ের জন্য রাখা গয়নাগাটি, টাকা নিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। ‘অপারেশন’ চালানোর সময়ে প্রতিবেশীদের বাড়ির দরজায় শিকল তুলে দিয়েছিল তারা। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গার আলুনি ঘোষপাড়ায়। পুলিশ পরে ঘটনাস্থলে এসে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে। দুষ্কৃতীদের ফেলে যাওয়া ফাঁকা গয়নার বাক্সটি উদ্ধার করলে পারলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৪ ০১:১৯
Share:

বিধ্বস্ত পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।

মেয়ের বিয়ের জন্য রাখা গয়নাগাটি, টাকা নিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। ‘অপারেশন’ চালানোর সময়ে প্রতিবেশীদের বাড়ির দরজায় শিকল তুলে দিয়েছিল তারা। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গার আলুনি ঘোষপাড়ায়। পুলিশ পরে ঘটনাস্থলে এসে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে। দুষ্কৃতীদের ফেলে যাওয়া ফাঁকা গয়নার বাক্সটি উদ্ধার করলে পারলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, আলুনি ঘোষপাড়ায় বাসিন্দা বাড়ি পেশায় কন্ডাক্টর ভজন হালদারের। রাতে একটি টালির চালের বাড়ির একটি ঘরে স্বামী-স্ত্রী এবং পাশের ঘরে তাঁদের দুই মেয়ে ঘুমোচ্ছিলেন। রাত আড়াইটে নাগাদ কয়েক জন দুষ্কৃতী বাড়িতে ঢুকে ভজনবাবুদের ঘরের দরজার হাতল গামছা দিয়ে বেঁধে দেয়। বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি তুলে দেয় তারা।

দুষ্কৃতীদের মধ্যে একজন ভজনবাবুর মেয়েরা যে ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন, সেই ঘরের টালি খুলে ভিতরে ঢুকে ভিতর থেকে দরজা খুলে দেয়। পরে ড্রেসিং টেবিলের উপরে রাখা আলমারির চাবি হাতিয়ে নিয়ে লুঠপাট শুরু করে তারা। ঘুম চোখে ভজনবাবুর মেয়ে পিয়ালী বুঝতে পারেনি দুষ্কৃতীরা ঢুকেছে ঘরে। তাঁর পাশে রাখা মোবাইলটি এক জন হাতিয়ে নিতে গেলে ঘুম ভেঙে যায় ওই তার। কাপড়ে মুখ বাঁধা এক দুষ্কৃতীকে দেখে তার জামার কলার চেপে ধরে বাড়িতে ডাকাত পড়েছে বলে চিৎকার করে সে। ভজনবাবুদের ঘুম ভেঙে যায়। উঠে পড়েন প্রতিবেশীরাও। কিন্তু প্রতিবেশী কয়েকটি বাড়ির দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ফলে কেউ বেরোতে পারেননি। দুই বোন পিয়ালী ও পায়েল মিলে এক দুষ্কৃতীকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু দুই বোনকে ধাক্কা মেরে ফেলে পালায় তারা। গত কয়েক দিন ধরেই দেগঙ্গার গ্রামে শুরু হয়েছে দুষ্কৃতীদের উপদ্রব। রবিবার থানার অদূরেই কালীমন্দিরের দরজা ভেঙে লক্ষাধিক টাকার অলঙ্কার লুঠ করে পালায় দুষ্কৃতীরা। ব্যবসায়ী আলমগীর আহমেদের বাড়িতেও ডাকাতির চেষ্টা হয়। রাতে পুলিশি টহল শুরু হয়েছে। কিন্তু তারপরেও এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ এবং আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ।

Advertisement

ভজনবাবুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে দুষ্কৃতীরা পালানোর পরে যখন গ্রামের মানুষ রাস্তায় জড়ো হয়েছেন, সে সময়ে পুলিশের টহলদার গাড়ি এসে পৌঁছয়। জনতা ক্ষোভ জানায়। পরে তল্লাশির সময়ে ভজনবাবুর বাড়ির কাছ থেকে গয়না রাখার কয়েকটি কৌটো পড়ে থাকতে দেখা যায়।

পিয়ালী বলেন, ‘‘আর কয়েক মাস পরে পায়েলের বিয়ে। সে জন্য অনেক কষ্ট করে কয়েক ভরি গয়না তৈরি করে রাখা হয়েছিল। দুষ্কৃতীরা ঘরে ঢুকে আলমারি খুলে প্রচুর টাকার গয়না এবং কয়েক হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে। আমার মোবাইল নেওয়ার সময়ে এক দুষ্কৃতীর জামার কলার চেপে ধরেছিলাম। সে আমাদের ধাক্কা মেরে ফেলে পালায়। যাওয়ার আগে আমাদের দুই বোনের দু’টি মোবাইল ফোনও নিয়ে গিয়েছে।’’

অন্য দিকে এ দিন জামাই ষষ্ঠি উপলক্ষে দেগঙ্গার নেতাজিপল্লির বাসিন্দা বাড়ি শুকদেব কর্মকারের বাড়িতে মেয়ে-জামাই এসেছিলেন। রাতে ঘুমোকে যাওয়ার আগে তাঁরা একটি হাতব্যাগের মধ্যে গয়না, মোবাইল এবং কয়েক হাজার টাকা রেখে দেন। প্রচণ্ড গরমের জন্য জানলা খোলা ছিল।

গভীর রাতে ওই জানলা দিয়ে লাঠি গলিয়ে ব্যাগ টেনে নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে শুকদেববাবু জানান, লক্ষাধিক টাকার গয়না ছিল ব্যাগে। এলাকায় তল্লাশি শুরু হলেও বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন