ধৃতদের আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: মোহন দাস।
আরামবাগের রামনগর গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্বামী ও ননদকে গ্রেফতার করেছে। আর এক অভিযুক্ত ননদের স্বামী পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে মৃত মহিলার নাম ময়না রানা (২৪)। তাঁর দু’টি কন্যা সন্তানও রয়েছে। ময়নাদেবীর ভাই পশ্চিম মেদিনীপুরের সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা শিবু দলুইয়ের অভিযোগ, বিয়ের পর দিদির প্রথম মেয়ে হওয়ার পর থেকে অশান্তি শুরু হয়। দ্বিতীয়বার মেয়ে হওয়ার পর দিদি অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিন্তু ডাক্তার না দেখিয়ে মেয়ে হওয়ার জন্য দিদির উপরে অত্যাচার শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁকে মারধরও করা হত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর পাঁচেক আগে পেশায় দিনমজুর তাপস রানার সঙ্গে সুলতানপুরের ময়নার বিয়ে হয়। বিয়ের বছর দুই পর তাঁদের একটি কন্যা সন্তান জন্মায়। তার পর থেকেই পরিবারে অশান্তি শুরু বলে বধূর ভাই এবং প্রতিবেশীদের অভিযোগ। প্রতিবেশীরা জানান, দ্বিতীয়বার মেয়ে হওয়ার পর থেকেই ময়না খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ফের মেয়ে হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে তাঁকে মারধর করত স্বামী ও অন্যরা। তাঁরা এর প্রতিবাদও করেছিলেন। কিন্তু তারপরেও মারধর চলছিল। তাঁদের অভিযোগ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফের মারধরের সময় তাঁরা গিয়ে প্রতিবাদ করলে তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তবে ময়নাদেবীর শাশুড়ি অসীমাদেবীর দাবি, “অভাবের জন্য আমরা পুত্রবধূর চিকিৎসা করাতে পারিনি। তবে তাঁকে মারধর করে মেরে ফেলার যে অভিযোগ উঠেছে তা মিথ্যা।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, আড়াই মাস আগে ময়নাদেবীর দ্বিতীয় কন্যা সন্তান জন্মানোর পর তাঁর শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লেও শ্বশুড়বাড়ি থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ময়নাদেবীর ময়নাতদন্তের পরে চিকিৎসক জানিয়েছেন শরীরে রক্ত শূন্যতার কারণে হার্টফেল করে মারা যান ময়নাদেবী। তাঁর শরীরে একেবারেই রক্ত ছিল না। তবে তাঁর উপরে শারীরিক ও মানসিকতা নির্যাতনের যে অভিযোগ করেছেন বাপের বাড়ির লোকজন তার তদন্ত করা হচ্ছে।