উত্তর ২৪ পরগনা

ভোগান্তি কমাতে ঢেলে সাজা হচ্ছে জেলার গ্রামীণ এলাকার পরিবহণ

লোকসভা নির্বাচনের আগে ঢেলে সাজা হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার পরিবহণ ব্যবস্থা। বিশেষ করে বনগাঁ-বসিরহাট ও বারাসত মহকুমার গ্রামীণ এলাকার পরিবহণ ব্যবস্থা। বন্ধ হয়ে যাওয়া বাসরুটে নতুন করে বাস চলাচল শুরু বা নতুন বাস রুট চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, নতুন বছরে ইতিমধ্যেই ৪০০টি বাসের ‘অফার লেটার’ বাস মালিকদের দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৪ ০৩:২২
Share:

লোকসভা নির্বাচনের আগে ঢেলে সাজা হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার পরিবহণ ব্যবস্থা। বিশেষ করে বনগাঁ-বসিরহাট ও বারাসত মহকুমার গ্রামীণ এলাকার পরিবহণ ব্যবস্থা।

Advertisement

বন্ধ হয়ে যাওয়া বাসরুটে নতুন করে বাস চলাচল শুরু বা নতুন বাস রুট চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, নতুন বছরে ইতিমধ্যেই ৪০০টি বাসের ‘অফার লেটার’ বাস মালিকদের দেওয়া হয়েছে। ৭টি নতুন বাসরুট চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং ‘অফার লেটার’ও দেওয়া হয়েছে। নতুন রুটের মধ্যে যেমন রয়েছে গাইঘাটার ঠাকুরনগর থেকে হাওড়ার আলমপুর (ভায়া নবান্ন)। তেমনই রয়েছে বসিরহাটের নবাদকাটি থেকে ফুরফুরা শরিফ বা চাকলা থেকে করুণাময়ী এবং চাকলা থেকে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। মতুয়াদের ধর্মস্থান ঠাকুরনগর। নির্বাচনের আগে মতুয়াদের মন পেতেই এই উদ্যোগ বলে মনে করছে বিরোধী দলগুলি।

লোকনাথ ধাম হিসাবে বিখ্যাত চাকলা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোজ বহু মানুষ এখানে আসেন। পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের কথা মাথায় রেখে বসিরহাটের নবাদকাটি থেকে ফুরফুরাশরিফ পর্যন্ত বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও বিরোধীদের বক্তব্য, সংখ্যালঘু ভোটের কথা মাথায় রেখেই এটা করা হয়েছে। কারণ বসিরহাট থেকে বহু সংখ্যালঘু মানুষ ফুরফুরাশরিফে যান। হাবরার মছলন্দপুর থেকে চাঁপাপুকুর পর্যন্ত বাস রুট চালু করা হচ্ছে।

Advertisement

বনগাঁ থেকে যশোহর রোড হয়ে দক্ষিণেশ্বর চলাচল করত চারটি বাস। ওই রুটে আরও ২৩টি বাসের ‘ইফার লেটার’ দেওয়া হয়েছে। পাশপাশি বনগাঁ থেকে গোপালনগর, জাগুলিয়া হয়ে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত বাস চলবে। ডি এন-৪২ রুটে ১০টি বাসের ‘অফার লেটার’ দেওয়া হয়েছে। এই রুটটি বারাসত থেকে ধামাখালি পর্যন্ত। বর্তমানে এই রুটে কোনও বাস নেই। ঘোজাডাঙা থেকে বারুইপুর পর্যন্ত রুটটি দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে। এই রুটে ৮টি বাসের ‘অফার লেটার’ দেওয়া হয়েছে। হাবরা-নৈহাটি রুটে ১১টি বাস চলে। এই রুটে আরও ১২টি বাসের ‘অফার লেটার’ দেওয়টা হয়েছে। নো-রিফিউজাল ট্যাক্সির জন্য ৬০০টি ‘অফার লেটার’ দেওয়া হয়েছে। ম্যাক্সি গাড়ির ‘অফার লেটার’ দেওয়া হয়েছে ১৪০টি।

জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ সংস্থায় রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি গোপাল শেঠ বলেন, “জেলার পরিবহণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজার সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। মুখ্যমন্ত্রী এহং পরিবহণমন্ত্রীর নির্দেশে জেলার বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকার পরিবহণ ব্যবস্থা উন্নত করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলায় গ্রামীণ এলাকায় ২০০টি ম্যাক্সিগাড়ি দেওয়ার। আমরা ১৪০টির মতো ‘অফার লেটার’ দিতে পেরেছি। ‘অফার লেটার’ পাওয়া গাড়ির মালিকদের তিন মাসের মধ্যে রাস্তায় গাড়ি নামাতে হবে।”

পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাসরুট থাকলেও বাস্তবে দেখা গিয়েছে, কোথাও রুট বন্ধ হতে বসেছে, কোথাও একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এমনও দেখা গিয়েছে, রুটে যত সংখ্যক বাস চলার কথা তা চলে না। ফলে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাঁদের জন্যই এই পদক্ষেপ। গোপালবাবু বলেন, “বনগাঁ ও বসিরহাট মহকুমায় এআরটিও অফিস তৈরির জন্য ১৭ লক্ষ টাকা অনুমোদন হয়েছে। কাজও শুরু হয়েছে। বারাসতে আরটিও অফিসের পরিকাঠামোরও উন্নতি করা হচ্ছে।”

রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর গ্রামীণ এলাকায় বেআইনি অটোর রমরমা বেড়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের ধরে ‘অফার লেটার’ বা পারমিট ছাড়াই হাজার হাজার অটো চলাচল করছে। পরিবহণ দফতর সূত্রেই জানানো হয়েছে, বর্তমানে এই জেলায় প্রায় পাঁচ হাজার বেআইনি ডিজেল চালিত অটো চলাচল করে। তবে একই সঙ্গে তাদের বক্তব্য, বহু বেকার যুবক এই পেশায় রয়েছে। তাই বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করে বেআইনি অটোগুলির পরিবর্তন করে সেগুলির জন্য ‘অফার লেটার’ দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। পাশাপাশি নতুন বাস, অটো, নো রিফিউজাল ট্যাক্সির জন্য কেউ আবেদন করলে তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন