আয়লা ঝড়ের পর পাঁচ পাঁচটি বছর পেরিয়ে গেছে। তবুও তৈরী হয়নি স্থায়ী নদীবাঁধ। তাই সামান্য ঝড়বৃষ্টিতে ধসে যাচ্ছে জোড়াতালি দিয়ে তৈরী অস্থায়ী নদীবাঁধ। কোথাও সেই অংশ দিয়ে ঢুকছে নদীর নোনাজল। কোথাও বা তলিয়ে যাচ্ছে গ্রামের রাস্তা। সব দেখেও হোলদোল নেই প্রশাসনের। সেই কারণে ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষদের।
২০০৯ সালের ২৫ মে আয়লা ঝড় আছড়ে পড়েছিল সুন্দরবনে। দুই পরগণায় সব মিলিয়ে প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন। তৎকালীন বাম সরকার আশ্বাস দিয়েছিল সুন্দরবনে কংক্রিটের নদীবাঁধ তৈরী করা হবে। তারপর গঙ্গা দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। পরিবর্তনের হাত ধরে নতুন সরকার এলেও পরিস্থিতি যেই তিমিরে ছিল, সেই তিমিরে রয়ে গেছে। সেই সময়ে ক্যানিং, গোসাবা, রায়দিঘি সহ বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন যে, সুন্দরবনে কংক্রিটের বাঁধ হবে। আয়লা নদীবাঁধ প্রকল্পে যাঁরা নদীবাঁধের জন্য জমি দেবেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি পরিবার পিছু একজনকে চাকরি দেওয়া হবে। আয়লায় ক্ষতিগ্রস্থ ৭৭৮ কিমি নদীবাঁধ মেরামতের জন্য তৎকালীন ইউপিএ সরকারও ৫০৩২ কোটি টাকা অনুমোদন করেছিল। তারপরেও তৈরী হয়নি স্থায়ী নদীবাঁধ। গোসাবা-বাসন্তী ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় নদীবাঁধের অবস্থা খুব খারাপ। কয়েকদিন আগে রাধানগর, সোনাখালিতে নদীবাঁধ ধসে যায়। সোনাখালি গ্রামে জল ঢুকে পড়ে। গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় সেচদপ্তর পরিস্থিতি কোনও রকমে সামাল দেয়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকদের দিয়ে কোথাও কোথাও নদীবাঁধে মাটি ফেলার কাজ করলেও, কোথাও স্থায়ী নদীবাঁধ গড়া কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানায় বাসিন্দারা বলেন, “ভোটের আগে সব রাজনৈতিক দলের নেতা নেত্রীরা কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ভোটপর্ব মিটে গেলে দেখা মেলেনা কারোরই। সবসময়েই আতঙ্কে থাকতে হয়। যদি নদীবাঁধ ভেঙ্গে পুনরায় সব কিছু হারাতে হয়।”সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায় বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের কারণে আমরা বাঁধ নিমার্ণের কাজ করতে পারিনি। তাছাড়া কেন্দ্র থেকে ১৩ ফিনান্সের টাকাও পাওয়া যায়নি। যে নদীবাঁধগুলির অবস্থা খুবই খারাপ সেগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।”