ছবি: সুব্রত জানা।
লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে সাত দিনও কাটেনি। উলুবেড়িয়ার আসন্ন পুরভোটের জন্য জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিল বিজেপি। শহর জুড়ে লাগানো হচ্ছে ফ্লেক্স। তাতে লেখা, ‘এ বার আমরা’।
উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে এ বারও ক্ষমতা ধরে রেখেছে তৃণমূল। তৃতীয় শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। কিন্তু ভোটের ফলের কাটাছেঁড়ায় দেখা যাচ্ছে, উলুবেড়িয়া পুরসভার বহু ওয়ার্ডেই রাজ্যের শাসক দলকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। তাতেই উৎসাহিত দলের নেতাকর্মীরা। তাঁদের দাবি, এ বার তৃণমূলের হাত থেকে পুরবোর্ড ছিনিয়ে নেবেন। আগামী ১০ জুলাই বর্তমান পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে থাকা উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে উলুবেড়িয়া পুরসভা। এখানে বিজেপি বরাবরই শক্তিশালী। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছিল ২১,৫৩০ অর্থাৎ ১৪.৫২ শতাংশ ভোট। অথচ, এই লোকসভা কেন্দ্রের বাকি ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্রে ওই বছর বিজেপি ভোট পেয়েছিল গড়ে তিন শতাংশ হারে।
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল পেয়েছে ৫৮,৭০২ ভোট। বিজেপি ৩৮,৩৫৯টি। শাসক দলের সঙ্গে তাদের ভোটের ব্যবধান ১৫ হাজার। এই কেন্দ্রে কংগ্রেস পেয়েছে ১৩,০৯২ ভোট এবং সিপিএম পেয়েছে বিজেপি-র চেয়ে হাজার চারেক বেশি ভোট।
২০১০ সালে পুরসভায় মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা ছিল মোট ২৯টি। কংগ্রেস-তৃণমূল জোট ২২টি ওয়ার্ডে জিতেছিল। দু’টি ওয়ার্ডে বিজেপি। শুরুর কয়েক মাস পুরসভা কংগ্রেসের দখলে থাকলেও পরে ওই দলের অধিকাংশ কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। পুরবোর্ডের দখল চলে আসে তৃণমূলের হাতে। লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে দেখা যাচ্ছে, নিজেদের দখলে থাকা দু’টি ওয়ার্ড ছাড়াও কংগ্রেস ও তৃণমূলের হাতে থাকা ন’টি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে গিয়েছে। পাঁচটি ওয়ার্ডে তারা কংগ্রেস ও তৃণমূলের থেকে খুব কম ভোটে পিছিয়ে আছে। সিপিএম এই ওয়ার্ডগুলিতে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
সম্প্রতি পুরসভার ওয়ার্ডগুলির সীমানা পুনর্বিন্যাস হয়েছে। ওয়ার্ডের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২। সংগঠনকে সামান্য সাজিয়ে নিয়ে এখন থেকে প্রচার শুরু করলে অল্প ভোটে পিছিয়ে থাকা ওয়ার্ডগুলিও জিতে পুরসভা দখল কঠিন হবে না বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতারা। বিজেপি-র হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা সভাপতি গৌতম রায়ের দাবি, “বর্তমান তৃণমূল শাসিত বোর্ডের লাগামছাড়া দুর্নীতির জবাব মানুষ লোকসভা নির্বাচনে দিয়েছেন। এ বার তৃণমূলকে তাঁরা পুরসভা থেকে সরিয়ে দেবেন।”
হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা তৃণমূল সভাপতি পুলক রায় বিজেপি-র দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “লোকসভা এবং পুরসভার ভোট সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষিতে হয়। পুরসভায় আমরা যথেষ্ট উন্নয়ন করেছি। তার জোরেই ফের পুরসভায় জিতব। বিজেপি দিবাস্বপ্ন দেখছে।”