ভোটই তাঁদের বাজি।
গোটা এলাকায় মূল রাস্তা বলতে একটিই। কিন্তু দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও গত বিশ বছরে সেটি পাকা হয়নি। ইট-মাটির গর্তে ভরা রাস্তায় চলতে গিয়ে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে। পানীয় জলেও আর্সেনিক। নেই নিকাশি। সুরাহা না হলে ভোটও দেবেন না বলে দাবি তুলে শুক্রবার সভা করলেন উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙা এলাকার রন্ধনগাছা গ্রামের মানুষ।
আমডাঙার হাবরা ২ নম্বর ব্লকের দিঘরা-মালিকবেড়িয়া পঞ্চায়েতের রন্ধনগাছা গ্রাম। সেখানে দিঘরা থেকে পশ্চিম নারায়ণপুর গ্রাম হয়ে কামদেবপুর হাট পর্যন্ত ওই রাস্তাটি প্রায় ১০ কিলোমিটার লম্বা। কৃষ্ণনগর রোড এবং যশোহর রোডের মতো দুই জাতীয় সড়কের মধ্যে সংযোগকারী রাস্তাও এটি। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে বাজার-হাট এবং হাসপাতালে যাওয়ার জন্য এলাকাবাসীকে এটিই ব্যবহার করতে হয়।
শুক্রবার বিকেলে গ্রামের সভায় রাস্তা সংস্কারের দাবি তোলেন গ্রামবাসীরা। পরে স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল মণ্ডল বলেন, “রাস্তাটি গত ২০ বছরে পাকা হয়নি। ইট উঠে মাটি বেরিয়ে পড়েছে। মোটরসাইকেল গেলেও ধুলোয় বাড়িতে থাকা যায় না। গর্তে পড়ে ঘটছে দুর্ঘটনা।” তাঁদের অভিযোগ, কলের জলে রয়েছে বিষাক্ত আর্সেনিক। তা খেয়ে আর্সেনিকের মতো মারণ রোগে ভুগছেন এলাকাবাসী। নর্দমা বা নিকাশির ব্যবস্থাও নেই। একটু বৃষ্টিতেই ওই রাস্তা ধরে যাতায়াত কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। হেঁটে পথ চলতে গিয়েও রাস্তার কাদায় পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে।
রফিকুল মণ্ডল নামে এক গ্রামবাসী বলেন, “গত কয়েক বছরে বহু নেতা-মন্ত্রী আমাদের এখানে এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু কাজ হয়নি। বাম আমলে, ২০০৩ সালেও আমরা বিদ্যুতের দাবিতে ভোট বয়কট করেছিলাম। তার পরেই গ্রামে বিদ্যুৎ আসে।” তার পরে অবশ্য তাঁরা আর ভোট বয়কট করেননি। এ দিনের সভায় লিফলেট বিলি করে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, বাম আমলে কাজ না হওয়ায় গত লোকসভা, বিধানসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে তাঁরা পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবর্তনের পরেও কাজ হয়নি।
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যা তাতে পাকা রাস্তা, নিকাশি ও পানীয় জলের দাবি পূরণ না হলে আড়াই হাজার ভোট এ বার হয়তো না-ও পেতে পারেন বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীরা। জেলা সভাধিপতি, তৃণমূলের রহিমা মণ্ডল অবশ্য বলেন, “বাম আমলে অনেক কিছুই হয়নি। আমরা ক্ষমতায় আসার পরে নতুন কিছু
প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আশা করি, ওখানেও রাস্তা পাকা করা-সহ বাকি কাজ হয়ে যাবে।”