সমুদ্র সৈকতের পাশ দিয়ে চলে যাবে কালো মসৃণ রাস্তা— দিঘা থেকে সোজা শঙ্করপুর। মুখ্যমন্ত্রী চান সে রাস্তার তুলনা হবে মুম্বইয়ের মেরিন ড্রাইভের সঙ্গে। জমির অভাবে দীর্ঘদিন সে প্রকল্প আটকে। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরে এসে এক প্রশাসনিক সভায় তা নিয়ে উষ্মা প্রকাশও করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ বার দিঘা থেকে শঙ্করপুর মেরিন ড্রাইভ তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে। জানুয়ারি মাসের মধ্যে টেন্ডার ডেকে কাজ শুরু করার জন্য নবান্নের শীর্ষ মহল থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দিঘা থেকে শঙ্করপুরের রাস্তায় তিনটে সেতু তৈরির কাজ শুরু হবে। সেতুর নকশা, মাটি পরীক্ষা ইতিমধ্যেই করা হয়েছে। এবং প্রয়োজনীয় জমিও পাওয়া গিয়েছে। রাস্তা এবং সেতু তৈরিতে খরচ হবে ৩০০ কোটি টাকা। রাজ্য সরকারই টাকা বরাদ্দ করেছে। পূর্ত দফতর এই কাজ করবে।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে দিঘা থেকে শঙ্করপুর যাওয়ার যে রাস্তা রয়েছে সেটি সমুদ্র থেকে দূর দিয়ে গিয়েছে। নতুন রাস্তা যাবে একেবারে সমুদ্রের পা়ড় ঘেঁষে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের বৈঠকের সময় জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে এই রাস্তা নিয়ে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকে পূর্ত দফতরের কর্তা এবং দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের কর্তৃপক্ষ ছিলেন। সৈকত সরণি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার মুখ্যমন্ত্রী সরকারি অফিসারদের জানিয়ে দেন, ছ’মাসের মধ্যে রাস্তার কাজ শেষ করতে হবে। তার পরেই নড়েচড়ে বসেন প্রশাসনের কর্তারা।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘা থেকে সমুদ্রের ধার ঘেষে শঙ্করপুরের এই রাস্তা ৩৫ কিলোমিটার লম্বা। এর মধ্যে তিনটি বড় খাড়ি রয়েছে। এর উপরে তিনটি সেতু তৈরি হবে। সব মিলে সেতুর দৈর্ঘ্য মোট ৩০০ মিটার। জোয়ার এবং ভাটার সময়ে সমুদ্রের জল খাড়িতে ঢোকে। ফলে জলতল ওঠানামা করে। তাই সেতু তৈরি করা নিয়ে প্রথম দিকে সমস্যা হচ্ছিল। সেই সমস্যা মিটেছে।
নবান্নের এক পূর্ত কর্তা বলেন, ‘‘দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ জমি দেবে। সেই জমিতে রাস্তা তৈরি হবে। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের পরিকল্পনা এটি। তাই এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই রাস্তা তৈরি হলে দিঘা থেকে শঙ্করপুর গাড়ি নিয়ে সমুদ্রের ধার দিয়ে যাতায়াত করা যাবে। সমুদ্রের শোভা দেখতে পাবেন পর্যটকরা।’’ এর ফলে পর্যটকের আকর্ষণ বাড়বে। আয় বাড়বে বলেও আশা তাঁর।