জোর নয়, দিলীপের পথ তাই বাধাহীনই

মাসদুয়েক আগে আকছাড়ই এমন সব দৃশ্য দেখেছে পাহাড়। এ বার কিন্তু নেতা এই কাজে উৎসাহ দেননি। বরং বিনয় থেকে মন ঘিসিঙ্গ বা হরকাবাহাদুর ছেত্রী, সকলেই কর্মীদের তাঁরা বুঝিয়েছেন, জবরদস্তি বা হিংসার রাস্তায় হাঁটা ঠিক নয়।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:০৪
Share:

সফর: কালিম্পঙে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বুধবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপা শিবিরের কেউ চেয়েছিলেন, কালিম্পঙের পথে আট মাইলেই আটকে দেওয়া হোক গাড়ি। জিএনএলএফ-গোর্খা লিগের কারও ইচ্ছে ছিল, সেবকে পথ অবরোধ করে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। আবার জন আন্দোলন পার্টির অনেকে বলেছিলেন, কালিম্পঙে পৌঁছলে সেখানেই নাস্তানাবুদ করা হোক দিলীপ ঘোষ ও তাঁর সঙ্গীদের। মাসদুয়েক আগে আকছাড়ই এমন সব দৃশ্য দেখেছে পাহাড়। এ বার কিন্তু নেতা এই কাজে উৎসাহ দেননি। বরং বিনয় থেকে মন ঘিসিঙ্গ বা হরকাবাহাদুর ছেত্রী, সকলেই কর্মীদের তাঁরা বুঝিয়েছেন, জবরদস্তি বা হিংসার রাস্তায় হাঁটা ঠিক নয়। তাই বিনা বাধায় পাহাড়ে পৌঁছন দিলীপ। পদযাত্রা, সভাও করেন।

Advertisement

আর পাহাড়বাসী আশা করছেন, এই ‘পরিবর্তন’ বজায় থাকবে।

যেমন, আট মাইলের মোর্চা সমর্থক নয়ন প্রধান, সিমন তামাঙ্গরা বলেন, ‘‘বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপার লোকেরা বিজেপির গাড়ি আটকাবে ভেবে তৈরি ছিলাম। কিছুই তো হল না।’’ তাঁর স্বগতোক্তি, ‘‘এটা ভাল হল। বিরোধী বলেই গাড়ি আটকে হাঙ্গামা করে লাভ কী!’’ পরে বলেন, ‘‘জুনে দার্জিলিঙে মন্ত্রীদের রাস্তা আটকে রাখা হয়েছিল। তারও পরে গৌতম দেবকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। তাতে তো গোর্খাল্যান্ড হয়নি!’’

Advertisement

সেবকের বিকাশ গুরুঙ্গ, প্রেমা লামা কিংবা কালিম্পঙের ডম্বর চকের ব্যবসায়ী মিংমা লেপচা, সোগেন গুরুঙ্গরা সকাল থেকেই হামলা, অবরোধ, ঢিল, মারপিটের আতঙ্কে ছিলেন। দিনের শেষে সকলেই স্বস্তিতে। মিংমা বললেন, ‘‘এক জনের সুরে সুর না মেলালে দার্জিলিঙে ঢোকা যাবে না, এটা চলতে পারে না।’’

তবে কালো পতাকা দেখানো হয়েছে দিলীপবাবুকে। তাঁর গাড়ি ঘিরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দেওয়া হয়েছে। জাপের সভাপতি হরকাবাহাদুর ছেত্রী বলেন, ‘‘রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্লোগান দিয়েছি। কিন্তু ওঁকে রাস্তায় বাধার সৃষ্টি করিনি। এই গণতান্ত্রিক পরিবেশ যেন পাহাড়ে বজায় থাকে।’’ মোর্চার আলোচনাপন্থী নেতা বিনয় তামাঙ্গ এ দিন দিনভর বিজেপি নেতাদের খবরাখবর রেখেছেন। কোথাও যাতে গাড়িতে হামলা না হয়, রাস্তা আটকানো না হয়, সেই ব্যাপারে বারেবারেই সতর্ক করেছেন তাঁরা।

বিনয় জানান, কাউকে পছন্দ না হলে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা না করে হিংসা চালানো পাহাড়বাসী আর পছন্দ করছেন না। বিমল গুরুঙ্গকেও তা বুঝতে হবে। এ দিন বিনয়ের বাড়িতে যান গুরুঙ্গ-অনুগামী প্রাক্তন জিটিএ সদস্য এবং তরুণ নেতা সতীশ পোখরেল। তাঁর পাশে থাকার কথাও ঘোষণা করেন। সেখানেও বিনয় বলেন, ‘‘আমরা গোর্খাল্যান্ড চাই। কিন্তু, পাহাড়ে আগুন জ্বালিয়ে, অশান্তি করে নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন