লক হয়ে গিয়েছিল নিয়মনিষ্ঠ কম্পিউটার। আর তার জেরে বেতন আটকে গিয়েছিল খোদ রাজ্য পুলিশের ডিজি-র!
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ষাট বছর পূর্ণ করেছেন সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। ওই দিন তাঁর অবসর নেওয়ার কথা থাকলেও ডিজি পদে তাঁর মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর মাসখানেক পরে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা জানতে পারেন, নবান্নের চোদ্দোতলা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ওই নির্দেশ বারো তলার অর্থ দফতরে পৌঁছয়নি। আর তাই লক হয়েই রয়েছে কম্পিউটার।
অর্থ দফতর সূত্র বলছে, কর্মচারীদের বেতন দিতে রাজ্যে ইন্টিগ্রেটেড ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইএফএমএস) চালু করা হয়েছে। এই ব্যবস্থায় কম্পিউটার সার্ভারে কর্মচারীর জন্ম তারিখ ও চাকরিতে যোগদানের দিন, বেতনের পরিমাণ ইত্যাদি তথ্য নথিভুক্ত করা থাকে। এবং সরকারের ঘর থেকে সরাসরি বেতন ও অন্যান্য পাওনা চলে যায় কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।
এখন কোনও কর্মচারীর বয়স ষাট পেরোলে আপনাআপনিই তাঁর নাম লক করে দেয় কম্পিউটার। তখন আর কোনও টাকা ওই কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যায় না। ডিজি-র ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। জানুয়ারি মাসে তাঁর বেতন আটকে যাওয়ার পরে হইচই পড়ে প্রশাসনে। অর্থ দফতর জানায়, ষাট বছরের পরে কাউকে বেতন দিতে হলে বিশেষ অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু ডিজি-র চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির কথা স্বরাষ্ট্র দফতরের পক্ষ থেকে তাদের জানানোই হয়নি। এর পরই তড়িঘড়ি ফাইল পাঠানো হয় অর্থ দফতরে। লক খোলে কম্পিউটারের।
অর্থ-কর্তাদের কেউ কেউ অবশ্য গর্ব করে বলছেন, ‘‘লক্ষ্য ছিল একটি নিশ্ছিদ্র ব্যবস্থা গড়ে তোলা। ডিজি-র ঘটনা প্রমাণ করেছে, ব্যবস্থায় কোনও ফাঁক নেই।’’