বাড়ি ফিরলেই তো শ্বশুরবাড়ি পাঠাবে!

পুলিশ সূত্রের খবর, সুস্মিতার বাড়ি রামনগর-১ ব্লকের পূর্ব মুকুন্দপুর গ্রামে। গত মার্চে ভূপতিনগরের ইটাবেড়িয়া গ্রামে তার বিয়ে দেওয়া হয়। তবে বিয়ের কয়েক দিন পরেই সে শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে দিঘা মোহনা থানায় চলে আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামনগর শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৩১
Share:

সুস্মিতা গিরি। নিজস্ব চিত্র

বিয়ে যখন হয়, বয়স তখন মাত্র তেরো। ছোট্ট মেয়েটি শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে সোজা হাজির হয়েছিল থানায়। সেখান থেকে ঠাঁই হয় হোমে। মেয়েকে হোম থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আইনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাবা-মা। কিন্তু আদালতে নাবালিকা জানায়, সে বাড়ি ফিরতে চায় না। হোমে সে ভালই রয়েছে!

Advertisement

রামনগরের বছর তেরোর সুস্মিতা গিরিকে শিশুদিবসে সাহসিকতার পুরস্কার দিয়েছেন জেলাশাসক রশ্মি কমল এবং জেলার পুলিশ সুপার ভি সলোমোন নেসাকুমার।

পুলিশ সূত্রের খবর, সুস্মিতার বাড়ি রামনগর-১ ব্লকের পূর্ব মুকুন্দপুর গ্রামে। গত মার্চে ভূপতিনগরের ইটাবেড়িয়া গ্রামে তার বিয়ে দেওয়া হয়। তবে বিয়ের কয়েক দিন পরেই সে শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে দিঘা মোহনা থানায় চলে আসে। পুলিশ এবং জেলা চাইল্ড লাইনের তৎপরতায় সুস্মিতার ঠাঁই হয় পাঁউশির অন্ত্যোদয় অনাথ আশ্রম পরিচালিত ‘স্নেহছায়া চাইল্ড কেয়ার ইনস্টিটিউশনে’।

Advertisement

আশ্রম সূত্রে খবর, হোমে সুস্মিতার সঙ্গে দেখা করতে আসেন তার পরিজন। কিন্তু ফের শ্বশুরবাড়িতে পাঠানো হবে, এই আশঙ্কায় সে বাড়ি ফিরতে চায়নি। সুস্মিতার বাবা-মা কাঁথি আদালতের দ্বারস্থ হন। সেখানে সুস্মিতা বিচারককে জানায়, সে পড়াশোনা করতে চায়। বাড়ি যেতে চায় না। আশ্রমের হোমে সে ভালই রয়েছে। সব শুনে বিচারক সুস্মিতাকে হোমেই ফেরত পাঠান।

পাঁউশি বৈকুণ্ঠ স্মৃতি মিলনী বিদ্যামন্দিরের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সুস্মিতার কথায়, ‘‘বড় হয়ে সমাজের সেবা করতে চাই।’’ আশ্রম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তার মা-বাবা আর আশ্রমে না এলেও ফোন করে খোঁজ নেন। আশ্রমের কর্ণধার বলরাম করণ বলেন, “সুস্মিতাকে সব রকম সাহায্য করা হবে।’’ জেলা চাইল্ড লাইনের তরফে তাপস জানা বলেন, ‘‘ওকে দেখে অন্যদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।’’

কাঁথির মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সুস্মিতাকে প্রচারের মুখ করতে পারলে, নাবালিকা বিয়ে রোখার ক্ষেত্রে ও বড় উদাহরণ হতে পারবে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন