প্রতীকী ছবি।
শীতে বেশ কয়েকবার সমস্যায় পড়তে হয়েছে। গ্রীষ্মে তা যাতে না হয়, সে বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশন। লাইন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দরকারি কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে, তা নিয়ে আলোচনাসভার আয়োজন, বিভিন্ন রুটে ট্র্যাক বদল ও উন্নতিকরণের কাজ চলছে বলে জানান ডিভিশনের কর্তৃপক্ষ।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার বেশ কয়েকদিন জাঁকিয়ে শীত পড়েছিল। সেই শীতে ডিভিশনের বিভিন্ন সেকশনে রেললাইনে ফাটল দেখা দিয়েছিল। যেমন, গত ৮ নভেম্বর সকালে কালীপাহাড়ি স্টেশনের কাছে বর্ধমান-আসানসোল মেন লাইনে ফাটল ধরা পড়ে। দ্রুত হাওড়া-রাঁচী শতাব্দী এক্সপ্রেসকে অন্য লাইন দিয়ে চালানোর ব্যবস্থা করতে হয়। ২৮ নভেম্বর ওই স্টেশনের কাছেই ফের ফাটল ধরা পড়ে। মেরামতের জন্য ডাউন হাওড়া ও শিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে থাকে বেশ কিছুক্ষণ। ১১ জানুয়ারি পানাগড় ও রাজবাঁধের মাঝে ফাটল দেখতে পান রেলকর্মীরা। মেরামতির জন্য ওই লাইনে আসা সব ট্রেনকে মাঝপথে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ১৯ জানুয়ারি আসানসোল স্টেশনের ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাছে ফাটল দেখতে পান রেলকর্মীরা। সেই সময় ওই প্ল্যাটফর্মে ঢুকছিল রক্সৌল-হাওড়া এক্সপ্রেস। দ্রুত লাল পতাকা দেখিয়ে থামিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনটিকে। ২১ জানুয়ারি অন্ডাল-সাঁইথিয়া সেকশনের উখড়ার কাছে ফাটল
ধরা পড়ে।
প্রতিটি ক্ষেত্রেই রেলকর্মীরা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় বিপদ ঘটেনি। সংশ্লিষ্ট রেলকর্মীদের পুরস্কৃতও করা হয়। তবে মেরামতের জন্য গড়ে প্রায় আধ ঘণ্টা করে লাইন বন্ধ করে দিতে হয়। ফলে ট্রেন চলাচলে সমস্যা হয়। ভোগান্তি হয় যাত্রীদেরও।
গ্রীষ্মেও লাইনে বেঁকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে ব্যবহৃত ‘এলডব্লিউআর’ (লং ওয়েল্ডেড রেল) ট্র্যাকগুলি লম্বায় ২৫০ মিটার বা তার বেশি। ট্রাকের কেন্দ্রীয় অংশ এমন ভাবে তৈরি, যাতে তাপমাত্রার ওঠানামার প্রভাবে বেঁকে না যায়। তবে মাঝেসাঝে বিপত্তি ঘটতে পারে।
কী ভাবে গ্রীষ্মে লাইনের রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে, আগাম কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার ও সংশ্লিষ্ট কর্মীদের নিয়ে শুক্রবার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ আলোচনাসভা আয়োজন করে। যোগ দেন ডিআরএম পিকে মিশ্র, এডিআরএম আরকে বার্নোয়াল প্রমুখ। আসানসোল ডিভিশনের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রূপায়ণ মিত্র বলেন, ‘‘এলডব্লিউআর ট্র্যাকের দেখভাল কী ভাবে করতে হবে, তা নিয়েই এই আলোচনাসভা।’’
গ্রীষ্মে লাইনের যে কোনও রকম বিপত্তি রুখতে সবরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা আগাম নেওয়ার কথা জানিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও সম্প্রতি বেশ কিছু জায়গায় ট্র্যাক বদলে ফেলা বা ট্র্যাকের উন্নতিকরণ করা হয়েছে। যেমন, আসানসোল ও কুলটির মাঝে ডাউন গ্র্যান্ড কর্ড রাজধানী রুটে প্রায় ১৩৪০ মিটার ট্র্যাক বদলে দেওয়া হয়েছে। বরাচক-আসানসোলের মাঝে ২৬০ মিটার ট্র্যাক বদলানো হয়েছে।