ঝালদার হত শিশুর মায়ের ডিএনএ পরীক্ষা

গত ২৪ জুলাই টাটানগর স্টেশন থেকে তিন বছরের শিশুকন্যাটিকে অপহরণ করা হয়। তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ধরা হয় জামশেদপুরের রামাধীরবাগানের রিঙ্কু সাউ ও কাশিডির কৈলাস কুমারকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও ঝালদা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৯ ০৩:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

জামশেদপুর থেকে যে শিশুর দেহটি উদ্ধার হয়েছিল, তা পুরুলিয়ার ঝালদার মহিলার কি না—সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ডিএনএ-পরীক্ষা করাতে চায় ঝাড়খণ্ড রেল পুলিশ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রেল পুলিশের ফোন পেয়ে শনিবার সকালে জামশেদপুরে যান শিশুটির মা। রেল পুলিশ সুপার (জামশেদপুর) এহেতেশাম ওয়াকারিব জানান, ঘটনার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ দল (সিট) গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে। দ্রুত চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।’’

Advertisement

গত ২৪ জুলাই টাটানগর স্টেশন থেকে তিন বছরের শিশুকন্যাটিকে অপহরণ করা হয়। তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ধরা হয় জামশেদপুরের রামাধীরবাগানের রিঙ্কু সাউ ও কাশিডির কৈলাস কুমারকে। পুরুলিয়ার ঝালদার স্বামীবিচ্ছিন্না ওই মহিলাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়ে-সহ টাটানগরে নিয়ে গিয়েছিল সাহেবগঞ্জের মনু মণ্ডল। গ্রেফতার করা হয় তাকেও। রেল পুলিশের দাবি, রিঙ্কু জেরায় তাদের কাছে শিশুটিকে অপহরণ, ধর্ষণ ও খুনের কথা স্বীকার করেছে। রামাধীরবাগানে তার দেখানো জায়গা থেকে শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার হলেও মাথার হদিস মেলেনি। লাভ হয়নি দু’বার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর নিয়ে তল্লাশি চালিয়েও। এ দিনও তল্লাশি করেছে রেল পুলিশ। তবে ধর্ষিতা শিশুর কাটা মাথার খোঁজ মেলেনি।

ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রিঙ্কু আগেও শিশু অপহরণ ও যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত। মাস ছয়েক আগে জামিনে জেল থেকে ছাড়া পায় সে। কৈলাস শিশুপাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে অনুমান তদন্তকারীদের। তবে মনুর সঙ্গে ওই দু’জনের আগে থেকে যোগাযোগ ছিল কি না, জানতে চাওয়া হলে রেল পুলিশের এসপি বলেন, ‘‘এখনও কিছু সংশয় রয়েছে। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ।’’

Advertisement

রেল পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মাথা না মেলা পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া দেহটি ওই নির্যাতিতা শিশুকন্যারই কি না, তা নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। তা ছাড়া, ঝালদার ওই যুবতী দেহ শনাক্ত করতে গিয়ে প্রথমে জ্ঞান হারান। এই পরিস্থিতিতে নিঃসংশয় হতে ডিএনএ-পরীক্ষার পথে এগনো হচ্ছে।

নির্যাতিতা শিশুর পরিজনেরা জানিয়েছেন, ঝাড়খণ্ডের সাকচিতে ৩০ জুলাই রেল পুলিশের উদ্ধার করা দেহটির শেষকৃত্য করা হয়েছে। নির্যাতিতার দাদু বলেন, ‘‘সবার খুব আদরের ছিল মেয়েটা। কিছু দিন হল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যাওয়া শুরু করেছিল। আমি দিনমজুর। অনেক কষ্টে ছোট্ট দু’টো সোনার দুল গড়ে দিয়েছিলাম।’’ শিশুটির গ্রামের লোকজনও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন। আজ, রবিবার ঝালদা শহরে একটি মিছিল করার কথা রয়েছে তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন