বিমান নামতেই চূড়ান্ত নাটক কোচবিহার বিমানবন্দরে

তৃণমূল বারবারই কোচবিহার বিমানবন্দর চালু করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। রাজ্যও এই নিয়ে একাধিকবার কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ০৩:২২
Share:

কোচবিহার বিমানবন্দরে বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। শনিবার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

বিকেলে বিমান নিয়ে এসে কোচবিহার বিমানবন্দরে নামলেন সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। নেমেই বলেন, “লোকসভা ভোটের পরে খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা কোচবিহার বিমানবন্দরে বিমান নামাতে সক্ষম হয়েছি। দু’দিন ‘ট্রায়াল’ হবে। কোচবিহার-বাগডোগরা ও কোচবিহার-গুয়াহাটি রুটে আপাতত ওই পরিষেবা চলবে।” তিনি এবং সঙ্গী বিমান সংস্থার লোকজনের কাছ থেকে জানা গেল, ১ অগস্ট থেকে নিয়মিতভাবে এই দু’টি রুটে বিমান চালানোর চেষ্টা চলছে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিমানবন্দর থেকে নিরাপত্তা তুলে নিতে গাড়ি পাঠায় জেলা প্রশাসন। যদিও গভীর রাতে পাওয়া খবরে, শেষ পর্যন্ত সব রক্ষীকে না তুলেই ফিরে আসে গাড়ি।

Advertisement

তার আগে বিমান ওঠানামা নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে পুরোদস্তুর চাপানউতোর চলে। তৃণমূল বারবারই কোচবিহার বিমানবন্দর চালু করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। রাজ্যও এই নিয়ে একাধিকবার কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানিয়েছে। এ বারে লোকসভা ভোটের আগে কোচবিহারে গিয়ে এই নিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেন বিজেপি শীর্ষ নেতারাও। এ দিন ৯ আসনবিশিষ্ট সেসনা বিমানটি থেকে নেমে নিশীথ জানান, সেই প্রতিশ্রুতিই রাখতে চলেছেন তাঁরা। এর পরেই নবান্নের তরফে জানানো হয়, এই বিমান চালানো নিয়ে রাজ্যকে কিছু জানানো হয়নি। বিমানবন্দরটি যে রাজ্যের সঙ্গে এএআই বা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে, সে কথা জানিয়ে নবান্নের বক্তব্য, তাই রাজ্যকে এড়িয়ে উড়ান চালু করা যায় না। এই প্রতিক্রিয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে সব ক’জন পুলিশকে সরিয়ে নিতে জেলা পুলিশের তরফে গাড়ি পাঠানো বলে খবর। কোচবিহার বিমানবন্দরের আধিকারিক বিপ্লব মণ্ডলও তখন জানান, রাজ্য পুলিশের দল চলে গেলে তাঁদের হাতে থাকা কয়েক জন প্রাক্তন ফৌজিকে দিয়ে রাতে বিমানটি পাহারার ব্যবস্থা করা হবে।

এ কথা শুনেই কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার কোনও ভাবেই চাইছে না যে কোচবিহার থেকে বিমান পরিষেবা চালু হোক।’’ জবাবে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, ‘‘বিমানবন্দর সব রকম ভাবে প্রস্তুত করে রাজ্য সরকার বারবার কেন্দ্রকে আবেদন করেছে, তা যেন দ্রুত চালু করা হয়। বিজেপি সরকার তা চালু করেনি।’’

Advertisement

প্রশ্ন উঠেছে, কোনও বিমান নিয়মিত ভাবে চালাতে গেলে কি রাজ্যের অনুমতি নেওয়াটা আবশ্যক? বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার যে হেতু রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি বিমানবন্দর, তাই এই বিমানবন্দর হয়ে উড়ান চালাতে গেলে রাজ্যকে জানানো এবং তার সম্মতি প্রয়োজন। জেলা রাজনৈতিক মহলের একটি অংশের অবশ্য বক্তব্য, নিশীথের এ দিনের উড়ানটির জন্য পুলিশ তুলে না নিলেই ভাল করত রাজ্য। জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, এই নিয়ে দীর্ঘক্ষণ স্নায়ুর লড়াই চলার পরে শেষ পর্যন্ত গভীর রাতে সব রক্ষীকে না নিয়েই তাদের গাড়িগুলি ফিরে আসে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন