—ফাইল চিত্র।
মাস দুয়েক আগে পার্ট টু পরীক্ষার কিছু খাতা ‘হারিয়ে’ গিয়েছিল। পরে তা উদ্ধার হলেও সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাওড়ার বিজয়কৃষ্ণ গার্লস কলেজে চলছে জমাটি নাটক!
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি অনার্স পার্ট টু পরীক্ষার ৩৭টি খাতা জমা না-পড়ায় নভেম্বরে টানাপড়েন শুরু হয় ওই কলেজে। পরে অবশ্য কলেজেই খাতা পাওয়া যায়। কিন্তু বিভ্রাটের জেরে সাসপেন্ড করা হয় এক শিক্ষিকাকে। তিনিই ছিলেন সংশ্লিষ্ট উত্তরপত্রগুলির পরীক্ষক। তাঁকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করার পরে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। বিচারপতি অরিন্দম সিংহ তাঁর রায়ে জানান, সাসপেনশনের প্রক্রিয়া বিধিসম্মত নয়। তাই কলেজ-কর্তৃপক্ষের নির্দেশ খারিজ করা হচ্ছে। তবে কলেজ-কর্তৃপক্ষ চাইলে ফের বিষয়টি বিবেচনা করে নতুন ব্যবস্থা নিতে পারেন। কলেজের অধ্যক্ষা রুমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কলেজের গভর্নিং বডি ফের এ বিষয়ে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে।’’
কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি, স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘‘বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে। খাতা হারালে কলেজ তো ব্যবস্থা নেবেই।’’ হাইকোর্টের রায় মেনে নিলেও তিনি জানান, এ বিষয়ে গভর্নিং বডি নিশ্চয়ই আবার সিদ্ধান্ত নেবে। কলেজ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করার সময় গভর্নিং বডির সদস্য-শিক্ষকেরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। তাঁদের মধ্যে কলেজ শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র সদস্যেরাও রয়েছেন। গভর্নিং বডির একাংশের মত, এই ঘটনায় কলেজের ভাবমূর্তিই নষ্ট হয়েছে।
কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার উত্তরপত্র রাখার ‘খাতাঘর’ থেকে সই করে ৩৭টি খাতা নিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষিকা সোনামণি বিশ্বাস। পরে কলেজ-কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, সেই ৩৭টি খাতা পাওয়া যাচ্ছে না। কলেজ সূত্রের খবর, পরে সংশ্লিষ্ট বিভাগের আলমারি থেকেই খাতাগুলি পাওয়া যায়। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, খাতাগুলি হারাল কী ভাবে? হারালই যদি, বিভাগীয় আলমারিতে তা পাওয়া গেল কোন মন্ত্রে? সদুত্তর নেই।
বক্তব্য জানতে সোনামণিদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি। তাঁর আইনজীবী রূপা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলেজের শো-কজের জবাবে আমার মক্কেল জানান, তিনি সব কিছুই নিয়ম মেনে করেছেন। পরে হাইকোর্টও সে-কথাই বলেছে।’’