উচ্চ মাধ্যমিকে মোবাইল

রেজিস্ট্রেশনও বাতিল কি না, বলবে কমিটি

মোবাইল নিয়ে কড়াকড়ি সত্ত্বেও এ বার মাধ্যমিকে জীবনবিজ্ঞান ছাড়া সব পরীক্ষায় হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র বাইরে বেরিয়ে যায়। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে প্রথম থেকেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯ ০৩:১৭
Share:

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়ায় উচ্চ মাধ্যমিকে বেশ কয়েক জনের পরীক্ষা এ বছরের মতো বাতিল করা হয়েছে। এ বার তাঁদের রেজিস্ট্রেশনও বাতিল হবে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হল।

Advertisement

মোবাইল নিয়ে কড়াকড়ি সত্ত্বেও এ বার মাধ্যমিকে জীবনবিজ্ঞান ছাড়া সব পরীক্ষায় হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র বাইরে বেরিয়ে যায়। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে প্রথম থেকেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। বুধবার, পরীক্ষার শেষ দিনে একটি একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা অত্যন্ত সুষ্ঠু ও ত্রুটিহীন ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’’

সারা রাজ্যে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোট ১৮টি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে সংসদ সূত্রের খবর। পরীক্ষা শুরুর আগে মহুয়াদেবী জানিয়েছিলেন, যে-সব পরীক্ষার্থীর ফোন বাজেয়াপ্ত করা হবে, বাতিল হবে তাঁদের রেজিস্ট্রেশনও। তা হলে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল না-করে শুধু এই বছরের পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল কেন? মহুয়াদেবী বলেন, ‘‘যাঁদের কাছে মোবাইল পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের অপরাধের মাত্রা বিচার করতে একটি ম্যালপ্র্যাক্টিস কমিটি গড়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে কি না, সিদ্ধান্ত নেবে সেই কমিটিই। প্রয়োজনে ওই পরীক্ষার্থীদের ডেকে পাঠানো হবে।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

মাধ্যমিকে প্রায় পুরো পরীক্ষা পর্ব জুড়েই প্রশ্ন বেরিয়ে যাওয়ায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়, সেই বিষয়ে পরামর্শ নিতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বেশ কয়েকটি শিক্ষা সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। তার ফলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে মনে করছে কয়েকটি শিক্ষক সংগঠন। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মাধ্যমিকে পরীক্ষা শুরুর পরে প্রশ্নের কিছু অংশ বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিল। সেটাকে প্রশ্ন ফাঁস বলা যায় না। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা তো সব মিলিয়েই সুষ্ঠু ভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। তাই দুই পরীক্ষাকেই ত্রুটিমুক্ত বলা যায়। এর জন্য সব শিক্ষককে অভিনন্দন জানাই।’’ পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকারের বক্তব্য, মাধ্যমিক পরীক্ষা থেকে শিক্ষা নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা যতটা সম্ভব ত্রুটিমুক্ত করার চেষ্টা করেছে সংসদ। তা সত্ত্বেও বেশ কয়েকটি মোবাইল ধরা পড়েছে। ‘‘এই ধরনের বড় পরীক্ষা শুরুর আগে পর্ষদ ও সংসদের কর্তারা যদি শিক্ষক সংগঠনগুলোর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠকে বসেন, তা হলে পরীক্ষা পদ্ধতি আরও ত্রুটিমুক্ত হবে,’’ বলেন নবকুমারবাবু।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালনার ক্ষেত্রে পার্থক্যের কথা তুলেছেন নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য। তিনি জানান, মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় পর্ষদ-প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের উপরে ভরসা রাখতে পারেননি। পরীক্ষা পরিচালনার জন্য প্রধান শিক্ষকদের উপরে বসিয়ে দিয়েছিলেন সরকারি অফিসারদের। এতে শিক্ষক সংগঠনগুলো খুব ব্যথিত হয়েছিল। উচ্চ মাধ্যমিক সংসদ কিন্তু তাদের পরীক্ষা পরিচালনার ক্ষেত্রে ভরসা রেখেছে প্রধান শিক্ষকদের উপরেই। ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে খুব সুষ্ঠু ভাবেই। শিক্ষকদের উপরে ভরসা রাখায় সংসদকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি,’’ বলেন কৃষ্ণপ্রসন্নবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন