প্রচারে বিধিভঙ্গের অভিযোগে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সতর্ক করল নির্বাচন কমিশন। রবিবার কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন ওই ব্যাপারে চিঠি দিয়ে রবীন্দ্রনাথবাবুকে সতর্ক করেন।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘কমিশনের নির্দেশে রবীন্দ্রনাথকে সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রচারে বিধিভঙ্গ করে বক্তব্য রেখেছেন। ফের এ ধরনের বক্তব্য রাখলে নির্দেশ মোতাবেক কমিশনকে জানানো হবে। কমিশন ব্যবস্থা নেবে।” রবীন্দ্রনাথবাবুকে আগেই শো-কজ-এর চিঠি পাওয়ার পরে ভুল স্বীকার করে রিটার্নিং অফিসারকে চিঠি দিয়েছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের চিঠি এখনও হাতে পাইনি। কমিশন যা নির্দেশ দেবে তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলব।” তবে বিরোধীরা কমিশনের ভূমিকায় সন্তুষ্ট নয়। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘আমরা জানতাম কমিশন কড়া কোনও পদক্ষেপ করবে না। সতর্ক করেছে এটাই অনেক!’’
কমিশন সূত্রের খবর, ৩ এপ্রিল কোচবিহারে কর্মিসভায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সামনে ভোটে জিততে দলীয় প্রার্থীদের প্রশাসনিক সহযোগিতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রবীন্দ্রনাথবাবু। তিনি বলেন, “হাত জোড় করে বলছি, সবাই একসঙ্গে জোড়া ফুল চিহ্নে ভোটটা দেবেন এবং করাবেন। ভোটটা করার জন্য প্রশাসনিক এবং অন্য যে মদত প্রয়োজন হবে, তা করব। পঞ্চায়েতে করেছি, লোকসভায় করেছি। কিন্তু জিততে হবে। জেতার জন্য যা যা দরকার তাই তাই করতে হবে।”
তার পরে গত রবিবার সকালে ফের কোচবিহার পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট প্রচারে বেরিয়ে দলীয় প্রার্থীকে ‘রাজ্য সরকারের প্রার্থী’ বলে ঘোষণা করেন রবীন্দ্রনাথবাবু। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলেন, “রাজ্য সরকার পুরসভার উন্নয়নে টাকা দেয়। সেই রাজ্য সরকারের প্রার্থী পলান (বিশ্বনাথ দে)। ইয়ং ছেলে। তাঁকে জোড়াফুল চিহ্নে ভোট দেবেন।” সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “এই ভোটটা উন্নয়নের ভোট। লোকসভার, বিধানসভার ভোট আলাদা। যে দলের কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে, যে দল রাজ্যে সরকারে রয়েছে, যে দলের পুরমন্ত্রী রয়েছে। সেই দলের প্রার্থীকেই ভোটটা দেওয়া উচিত। অন্য কাউকে দিলে ভোটটা নষ্ট হবে। এলাকার উন্নয়ন থমকে যাবে। অন্য প্রার্থী জিতলে বলবে আমাদের দল ক্ষমতায় নেই, আমরা পুরবোর্ডে নেই, কী করে উন্নয়ন করব? সে জন্যই বলছি আমাদের প্রার্থীকে জেতান।” ওই দু’টি ঘটনা নিয়েই বিধিভঙ্গের অভিযোগ ওঠে। রবীন্দ্রনাথবাবুকে শো-কজও করে কমিশন।