Education

এমএসকে-এসএসকে ছাড়তে চায় ‘নাজেহাল’ শিক্ষা দফতর

দফতরের কর্তাদের একাংশের দাবি, কারণটা পরিচালনাগত সমস্যা। শিক্ষা দফতরের অধীনস্থ স্কুলগুলির শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬০ বছর। এমএসকে-এসএসকের শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬৫।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৫৪
Share:

দু’বছর আগে ওই দু’ধরনের শিক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্ব পঞ্চায়েত দফতরের হাত থেকে চলে গিয়েছিল শিক্ষা দফতরের হাতে। প্রতীকী ছবি।

দু’বছর চালিয়েই ‘নাজেহাল’ শিক্ষা দফতর। আর রাজ্যের কয়েক হাজার শিশু শিক্ষাকেন্দ্র (এসএসকে) এবং মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র (এমএসকে) তারা নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে না। সেগুলি পঞ্চায়েত দফতরের হাতেই ফিরিয়ে দিতে চায় তারা। সম্প্রতি সেই প্রস্তাব সংবলিত চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে। দু’বছর আগে ওই দু’ধরনের শিক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্ব পঞ্চায়েত দফতরের হাত থেকে চলে গিয়েছিল শিক্ষা দফতরের হাতে।

Advertisement

পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘শিক্ষা দফতরের চিঠি পেয়েছি। তবে, ২০২০ সালে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল মন্ত্রিসভার বৈঠকে। তাই চটজলদি এ ব্যাপারে কোনও মতামত দেওয়া যাবে না। বিভিন্ন মহলে আলোচনা করতে হবে।’’

কেন শিক্ষা দফতর ওই কেন্দ্রগুলির দায়িত্ব আর নিতে চাইছে না?

Advertisement

দফতরের কর্তাদের একাংশের দাবি, কারণটা পরিচালনাগত সমস্যা। শিক্ষা দফতরের অধীনস্থ স্কুলগুলির শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬০ বছর। এমএসকে-এসএসকের শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬৫। ফলে, একই দফতরের অধীনে দুই ধরনের শিক্ষকদের অবসরের দু’রকম বয়স চলতে পারে না। এতে অসুবিধা হচ্ছে। তা ছাড়া, প্রতি জেলায় এমএসকে-এসএসকে দেখভালের জন্য এক জন জেলা সমন্বয়কারী আছেন। প্রতি ব্লকে আছেন এক জন করে সমিতি শিক্ষা আধিকারিক। তাঁরা পঞ্চায়েত দফতরের অধীনে। এর ফলে জগাখিচুড়ি পরিস্থিতিতে নাজেহাল হতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা দফতরের বক্তব্য, ফের যদি ওই দু’ধরনের শিক্ষাকেন্দ্র পঞ্চায়েতের হাতে যায়, তা হলে সেগুলির সুষ্ঠু পরিচালনায় সুবিধা হবে।

রাজ্যে পঞ্চায়েত দফতরের অধীনেই ২০০৩ সাল থেকে এমএসকে-এসএসকে গড়ে তোলা শুরু হয়। ঠিক হয়, কোনও গ্রামে এক কিলোমিটারের মধ্যে প্রাথমিক স্কুল না থাকলে সেখানে শিশু শিক্ষাকেন্দ্র এবং তিন কিলোমিটারের মধ্যে হাই স্কুল না থাকলে সেখানে মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র গড়া হবে।

শিশু শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে পঠনপাঠন হয় রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের নিয়ম মেনে। অন্য দিকে, নামে মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র হলেও এখানে পড়ানো হয় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। মিড-ডে মিল-সহ অন্য স্কুলের পড়ুয়াদের যা যা সুবিধা দেওয়া হয়, সবই পায় এই দুই ধরণের শিক্ষাকেন্দ্রের পড়ুয়ারা। শিক্ষক নিয়োগ করে পঞ্চায়েত দফতর। শিক্ষকদের এককালীন থোক টাকা বেতন দেওয়া হয়। কিন্তু চালু হওয়ার কয়েক বছর পর থেকে নিয়মিত বেতনের জন্য ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুলগুলিকে শিক্ষা দফতরের অধীনে নেওয়ার দাবি করতে থাকেন। মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র থেকে অষ্টম শ্রেণির পরে স্কুলছুট হওয়ার সমস্যার কথাও তাঁরা তোলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে দু’ধরনের শিক্ষাকেন্দ্রকে শিক্ষা দফতরের অধীনে আনা হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে।

শিক্ষা দফতর কেন্দ্রগুলি ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়ায় প্রমাদ গুনছেন ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের আশঙ্কা, ফের তাঁরা বেতন সমস্যায় ভুগবেন। রাজ্য শিক্ষা দফতরের এক কর্তা অবশ্য জানান, গোড়া থেকেই সর্বশিক্ষা মিশন থেকে এই সব শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়। শিক্ষা দফতরের হাতে আসার পরেও মিশনের তহবিল থেকেই শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হচ্ছিল। ফলে, বেতনের সমস্যা হবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement