ট্রেনটা চলে যেতেই সকলের চোখ ছানাবড়া! ম্যাজিক নাকি!
দুরন্ত গতিতে ছুটে আসছে এক্সপ্রেস। সামনে পড়ে গিয়েছেন লাঠি হাতে এক বৃদ্ধ। কিন্তু তিনি না-ঘাবড়ে লাইনের মাঝেই লম্বালম্বি উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লেন। আতঙ্কে প্ল্যাটফর্মের যাত্রীরা চোখ বুজে ফেলেছিলেন! কিন্তু ট্রেন চলে যেতেই সকলে অবাক। ফের লাঠিতে ভর করে উঠে দাঁড়াচ্ছেন বৃদ্ধ! শরীরে একটা আঁচড়ও লাগেনি।
শনিবার, অক্ষয় তৃতীয়ার সকালে পূর্ব রেলের হাওড়া-ব্যান্ডেল শাখার রিষড়া স্টেশনে এমন ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। বছর আশির ওই বৃদ্ধকে উঠে দাঁড়াতে দেখেও অনেকে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। কেউ তাঁর হাত ধরেন। কেউ জলের বোতল এগিয়ে দেন। রিষড়ার ডক্টর বি সি রায় সরণির বাসিন্দা, নারায়ণচন্দ্র সাহা নামে ওই বৃদ্ধ কিন্তু এর পরেও ছিলেন ভাবলেশহীন। যেন কিছুই হয়নি! বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন নারায়ণবাবু। পরে তাঁকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বৃদ্ধ কোনও রকমে বলেন, ‘‘ট্রেন দেখে শুয়ে পড়েছি।’’
আরও পড়ুন:ডানলপ অধিগ্রহণ কবে, দিন গুনছেন শ্রমিকেরা
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তখন সকাল সওয়া ১১টা। ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে রেললাইন টপকে ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে উঠতে যাচ্ছিলেন নারায়ণবাবু। তখনই ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে প্রচণ্ড গতিতে ঢুকে পড়ে বোলপুরগামী আপ কবিগুরু এক্সপ্রেস। ট্রেনটি ওই স্টেশনে দাঁড়ায় না। ফলে, গতিও কমেনি। তার পরেই ওই কাণ্ড! ট্রেন চলে যাওয়ার পরে সকলে নারায়ণবাবুকে ধরে প্ল্যাটফর্মে তোলেন। রিষড়ার বাসিন্দা রূপম বসু সেই সময় ট্রেন ধরার জন্য প্ল্যাটফর্মেই ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘দৃশ্যটা চোখে ভাসছে। কয়েক মুহূর্তের জন্য যেন স্নায়ুগুলো কাজ করছিল না!’’ অনেকেই বলতে শুরু করেন, এমন ঘটবে জানলে তাঁরা মোবাইল ফোনের ভিডিও ক্যামেরা ‘অন’ রাখতেন। যাত্রীদের মধ্যে স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অমল দত্ত বলেন, ‘‘রাখে হরি মারে কে— এই প্রবাদটা চোখের সামনে সত্যি হতে দেখলাম!’’
ঘটনার পরেই রিষড়া জিআরপি-র ইনচার্জ রাখহরি সিংহ নারায়ণবাবুকে নিয়ে গিয়ে অফিসে বসান। জল খাওয়ানো হয়। নারায়ণবাবুর বাড়িতেও খবর দেওয়া হয়। রেল পুলিশের কর্মীরা জানান, এমন গায়ে কাঁটা দেওয়া ঘটনার পরেও বৃদ্ধকে দেখে বোঝার উপায় ছিল না। তিনি স্বাভাবিক ছিলেন। কিছুক্ষণ পরেই বাড়ির লোক এসে তাঁকে নিয়ে যান। তবে কেন তিনি রেল লাইন টপকাচ্ছিলেন, সেটা বলেননি নারায়ণবাবু।