মেয়েদের ভোটে টানতেও ফুটবল

দক্ষিণ দিনাজপুরের স্লোগান, ‘শক্তিশালী নারী, আরও শক্তিশালী গণতন্ত্র’। তা সামনে রেখেই ওই জেলার ‘ইলেক্টোরাল লিটারেসি ক্লাব’ (ইএলসি) কাপে যোগ দিয়েছে মেয়েদের ৩৭টি টিম।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৪
Share:

উদ্যোগ: দক্ষিণ দিনাজপুরে নয়া ভোটারদের সচেতনতা বাড়াতে মেয়েদের ফুটবল। নিজস্ব চিত্র

ভোটের ময়দানে মেয়েরা এখনও পিছিয়ে। প্রার্থী বা ভোটার— সংখ্যার লড়াইয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ পুরুষেরাই। এ বার ভোটার তালিকায় নারী-পুরুষের ব্যবধান কমিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ রাজ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে মেয়েদের ফুটবলকে ‘অস্ত্র’ করছে কয়েকটি জেলা। দক্ষিণ দিনাজপুরের মতোই সেই তালিকায় রয়েছে পুরুলিয়া, কোচবিহার। আর বীরভূমে ফুটবলে যোগ দিয়েছিল বিশেষ চাহিদাসম্পন্নেরা।

Advertisement

দক্ষিণ দিনাজপুরের স্লোগান, ‘শক্তিশালী নারী, আরও শক্তিশালী গণতন্ত্র’। তা সামনে রেখেই ওই জেলার ‘ইলেক্টোরাল লিটারেসি ক্লাব’ (ইএলসি) কাপে যোগ দিয়েছে মেয়েদের ৩৭টি টিম। পুরুলিয়ার ঝালদা, কোচবিহারের হলদিবাড়িতে ব্লক স্তরের ফুটবলে মেয়েদের অংশগ্রহণ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেন সিইও বা রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের দফতরের কর্তারা। ভাবী ভোটারদের টানতে ইএলসি কাপ আয়োজন করেছিল কমিশন।

ভোটার তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে ‘চলো খেলি, নাম তুলি’-কে স্লোগান করেছে কমিশন। তা বাস্তবায়িত করতে ছাত্রীদের ফুটবলকেই হাতিয়ার করছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। ব্লক স্তরে ছাত্রীদের ৩৭টি ফুটবল টিমকে নিয়ে প্রতিযোগিতা হয়। সেখান থেকে বাছাই টিমগুলিকে নিয়ে দু’টি মহকুমা স্তরে প্রতিযোগিতা শেষ হয়েছে। শনিবার জেলা স্তরে এই প্রতিযোগিতার ফাইনালে কুশমণ্ডি বল্ক ৪-০ গোলে হারিয়েছে তপনকে। জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক মহাদ্যুতি অধিকারী বলেন, ‘‘ভোটার তালিকায় মহিলা এবং পুরুষের আনুপাতিক হার কম ছিল। তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতেই এই উদ্যোগ।’’ আর জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া পি বলছেন, ‘‘এখানে কন্যাশ্রী ক্লাব আছে। মেয়েরা ১৬-১৭ বছর বয়সি। এতে ভোটার তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে তাদের সচেতনতাও বাড়বে।’’

Advertisement

বীরভূম জেলা প্রশাসন ভিন্ন পথে হেঁটে ইএলসি কাপের প্রতিযোগিতায় সাধারণ ছেলেদের পাশাপাশি বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের নিয়ে তৈরি টিমকেও রেখেছিল। তাতে পাঁচ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছাত্রের সঙ্গে আছে ছ’জন সাধারণ ছাত্র। স্পেশ্যাল অলিম্পিক্স নিয়ে ফিফার নির্দেশিকা অনুযায়ী এই টিম গড়া হয়েছে বলে জানান এক আধিকারিক। ‘‘কমিশন বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের যত বেশি সম্ভব বুথমুখী করতে চাইছে। তারা ইএলসি কাপে যোগ দেওয়ার ফলে সচেতনতা বৃদ্ধির সঙ্গে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নেরা উৎসাহী হবে,’’ বলেন বীরভূমের ওসি (ইলেকশন) বুদ্ধদেব পান।

বীরভূমে ইএলসি কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের টিমই। এ রাজ্যে ফুটবল শুধু প্রতিযোগিতায় নয়, মানুষের হৃদয়কে ছুঁয়েছে বলে দাবি সিইও দফতরের কর্তাদের। এই উদ্যোগ জাতীয় নির্বাচন কমিশনেরও প্রশংসা কুড়িয়েছে। মেয়েদের ফুটবল কয়েকটি জেলায় হলেও ছেলেদের প্রতিযোগিতা হয়েছে সর্বত্রই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন