কমিশনের অ্যাপে সবাই এ বার ভোট নজরদার

বিধানসভা ভোটে কোথায় কী ঘটছে, তা জানতে কেবল ভোটকর্মীদের ভরসাতেই বসে থাকতে চায় না নির্বাচন কমিশন। সাধারণ মানুষও যাতে সহজেই তাঁদের খবর পৌঁছে দিতে পারেন, তার জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ আনছে কমিশন। অ্যাপের নাম সমাধান।

Advertisement

কাজী গোলাম গউস সিদ্দিকী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:০০
Share:

বিধানসভা ভোটে কোথায় কী ঘটছে, তা জানতে কেবল ভোটকর্মীদের ভরসাতেই বসে থাকতে চায় না নির্বাচন কমিশন। সাধারণ মানুষও যাতে সহজেই তাঁদের খবর পৌঁছে দিতে পারেন, তার জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ আনছে কমিশন। অ্যাপের নাম সমাধান। কোথাও গোলমাল দেখলে যে কেউ ওই অ্যাপ-এর সাহায্যে কমিশন অফিসে ছবিও পাঠিয়ে দিতে পারবেন। এর ফলে পরিস্থিতি অনুযায়ী দ্রুত

Advertisement

ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। যিনি খবর বা ছবি পাঠালেন, তাঁর পরিচয় গোপন রাখবে কমিশন।

রাজ্যে বিগত ভোটগুলির সঙ্গে এ বার কমিশনের ব্যবস্থাপনায় বেশ কিছু নতুনত্ব থাকছে। প্রতিটি বুথেই থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রয়োজনে ভোটের এক-দেড় মাস আগে থেকেই যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারির ব্যবস্থা হতে পারে, কলকাতায় এসে জানিয়ে গিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদী। এলাকায় উত্তেজনা বা শাসানির কারণে ভোটকেন্দ্রে যেতে অপারগ কোনও ভোটার কমিশনের সাহায্য চাইলে সেই ক্ষেত্রেও তাঁর পাশে দাঁড়াবে কমিশন। প্রয়োজনে পুলিশের গাড়ি পাঠিয়ে ওই ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন।

Advertisement

কমিশন মনে করছে, এ রাজ্যে অবাধ ও নিরপেক্ষ ভাবে ভোট করাতে এই ব্যবস্থাগুলিই যথেষ্ট না-ও হতে পারে। সেই কারণেই বিশেষ মোবাইল অ্যাপ-এর সিদ্ধান্ত। যে কোনও অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে ওই অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে। কোন সময়ে, কী ভাবে তা করা যাবে, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরে বিজ্ঞাপন দিয়ে সে সব জানিয়ে দেওয়া হবে বলে কমিশনের এক কর্তা জানান। তিনি বলেন, ‘‘এ বার একই সময়ে পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে। ওই নির্বাচনেই প্রথম ওই অ্যাপ চালু হচ্ছে।’’

ওই অ্যাপ-এর সাহায্যে সাধারণ মানুষ বা রাজনৈতিক দল কমিশনের বিশেষ পোর্টালে ওই অভিযোগ জানানোর সঙ্গে সঙ্গে তা পৌঁছে যাবে সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশের সেক্টর অফিসার ও নির্বাচন কমিশনের নিযুক্ত পর্যবেক্ষকের কাছে। কমিশনের ওই কর্তা বলেন, ‘‘ভোটের দিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তো অভিযোগ জানিয়েই থাকে। কিন্তু সমাধান অ্যাপ-এর সাহায্যে সকলেই কার্যত ভোট পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করতে পারবেন।’’

সমাধান অ্যাপের মাধ্যমে ভোটের আগেই যে সব অভিযোগ আসবে, সেগুলি পৌঁছে যাবে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের কাছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার তা জানিয়ে দেবেন কমিশনকে। জানাতে হবে, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারকেও। অভিযোগ রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে এলে ব্যবস্থা নেওয়ার সময়সীমা ২৪ ঘণ্টা, আর সাধারণ মানুষের অভিযোগের তদন্ত শেষ করতে হবে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে।

সমাধান অ্যাপ-এর মাধ্যমে অভিযোগ জানানোর সঙ্গে সঙ্গে একটি ‘ডকেট’ নম্বর পাবেন অভিযোগকারী। নির্দিষ্ট সময়ের পরে কমিশনের পোর্টালে তিনি দেখে নিতে পারবেন, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যদি তখনও কোনও ব্যবস্থা না-নেওয়া হয়ে থাকে, তখন ওই ব্যক্তি ফের অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

কমিশন তখন সংশ্লিষ্ট অফিসারের কাছে কৈফিয়ত তলব করবে।

তবে ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে সাধারণ মানুষ, কোনও ভোটার বা রাজনৈতিক কর্মী মোবাইল ফোন নিয়ে যেতে পারবেন না। ভোটকেন্দ্রের ভিতরে-বাইরে কোনও সমস্যা বা গোলমাল দেখলে ১০০ মিটারের বাইরে গিয়ে কমিশনের বিশেষ পোর্টালে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন