গ্রাফিক আনন্দবাজার ডট কম।
শুনানি শুরুর আগেই ওবিসি এবং স্থায়ী বাসিন্দা শংসাপত্র নিয়ে কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। প্রথমটির ক্ষেত্রে, ২০১১ সালের পরে বাতিল হওয়া শংসাপত্রগুলির পূর্ণাঙ্গ তথ্য চাওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে। দ্বিতীয়টি নিয়েও রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। ঘটনাচক্রে, এই দু’টি নথি কমিশনের তালিকাভুক্ত ১৩টি নথির অন্যতম। তাই নথি তৈরিতে মানুষকে সহযোগিতা করতে জেলা প্রশাসনগুলিকে বলছে সরকারও। সেই দিক থেকে নথির যাচাই নিয়ে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করেছে কমিশন।
সম্প্রতি অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের সচিবকে চিঠি দিয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) কার্যালয় বলেছে, আদালতের সর্বশেষ নির্দেশের পরে এ রাজ্যে ওবিসি শংসাপত্রের কী পরিস্থিতি তা জানাতে হবে। আরও বলা হয়েছে, ওবিসি শংসাপত্র দেওয়ার জন্য জারি হওয়া যে বিজ্ঞপ্তি আদালত বাতিল করেছিল এবং তার আওতায় জারি করা শংসাপত্রগুলির সম্পর্কে (বাতিল হওয়া) তথ্য পাঠাতে হবে কমিশনকে। ঘটনাচক্রে, রাজ্যে এসআইআর-নথি যাচাইয়ে ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাতিল ওবিসি শংসাপত্র ব্যবহারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ গত বুধবারই দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা রাও। আদালতের নির্দেশ, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে কমিশনকে।
রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরকে স্থায়ী বাসিন্দার শংসাপত্র (পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট সার্টিফিকেট বা পিআরসি) নিয়েও ব্যাখ্যা দিতে বলেছে সিইও কার্যালয়। বিভিন্ন জেলা প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, ডব্লিউবিসিএস এবং জেলা-আধিকারিক স্তরে ২০০০ সালে জারি হওয়া স্বরাষ্ট্র দফতরের একটি আদেশনামা ঘোরাফেরা করছে। সেখানে ‘ডোমিসাইল সার্টিফিকেট’ এবং পিআরসি-কে এক গোত্রে ফেলে সরকার জানিয়েছিল, এমন শংসাপত্র জেলাশাসকের সঙ্গে অতিরিক্ত জেলাশাসক (এডিএম) এবং এসডিও-রাও দিতে পারেন। তবে সেই আদেশনামা ছিল শুধুমাত্র সেনা এবং আধাসেনাদের জন্যই। যদিও তা সাধারণ ক্ষেত্রেও ব্যবহারের চেষ্টা হয়েছে বলে কমিশনের কাছে অভিযোগ এসেছে। তারপর সিইও দফতর সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র দফতরকে চিঠি দিয়ে বলেছে, এখন এ রাজ্যে পিআরসি দেওয়ার এক্তিয়ার কাদের হাতে রয়েছে, তা জানাতে হবে। বলতে হবে, কোন আদেশনামা, আইন বা বিধির আওতায় এমন শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে। কোন পদ্ধতিতে এবং কী ধরনের যাচাইয়ের ভিত্তিতে এমন শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে, ব্যাখ্যা করতে হবে তা-ও। শুনানির আগেই এই ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে নবান্নকে।
প্রসঙ্গত, সরকারের নিজস্ব বিধিতে আবেদনকারী বা তাঁর মা-বাবাকে টানা ১৫ বছরের বেশি সংশ্লিষ্ট এলাকায় বসবাস করতে হয়। থাকতে হবে স্থাবর কোনও সম্পত্তি। এর সঙ্গে শিক্ষা সংক্রান্ত নথি থাকতে হয় আবেদনকারীর কাছে। এ সবের পরে পুলিশের রিপোর্ট এবং নাগরিকত্ব প্রমাণের ভিত্তিতে পিআরসি দেওয়ার রীতি রয়েছে এ রাজ্যে।কমিশন সূত্রের বক্তব্য, পদ্ধতিটি সময়সাপেক্ষ ও সুনির্দিষ্ট বিধি নির্ভর।ফলে এসআইআর ঘোষণার পরএমন কোনও আবেদন হয়ে থাকলেতা এত দ্রুত পাওয়া সম্ভব নয়। যাচাইয়ের প্রশ্নে এই দিকটি থেকেও নিশ্চিত থাকতে চাইছে কমিশন।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে