Reverse Mortgage of Senior Citizen

নিজের বাড়ি থাকলেই প্রতি মাসে মিলতে পারে দেড় লাখ! ষাটোর্ধ্বদের জন্য সরকারি- বেসরকারি ব্যাঙ্কে রয়েছে লোভনীয় প্রকল্প

প্রবীণ নাগরিকদের জন্য সুখবর। অবসরের পর তাঁদের আর্থিক সঙ্কট মেটাতে সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কে বিশেষ একটি বন্ধকি প্রকল্প রয়েছে। সেখান থেকে মাসে মাসে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত পাওয়া সম্ভব।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:২৪
Share:
০১ ১০

বেসরকারি চাকরিজীবীদের একাংশের অবসর-পরবর্তী জীবন একেবারেই সুখকর নয়। চাকরির মেয়াদ শেষ হলেই আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েন তাঁরা। কারণ তত দিনে বন্ধ হয়ে যায় বেতন কিন্তু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে সাংসারিক ব্যয়। এই পরিস্থিতিতে নিজস্ব বাড়ি থাকলে, সেটাই আয়ের উৎস হয়ে উঠতে পারে তাঁদের। সেখান থেকে প্রতি মাসে দেড় লাখ টাকা মাসিক পেনশন পেতে পারেন তাঁরা। কী ভাবে? আনন্দবাজার ডট কম-এর এই প্রতিবেদনে রইল তার হদিস।

০২ ১০

প্রবীণ নাগরিকদের জন্য সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্কে বিপরীত বন্ধকি বা রিভার্স মর্টগেজ নামের একটি প্রকল্প রয়েছে। শুধুমাত্র বাড়ির বাজারমূল্যের উপর ভিত্তি করে সেখান থেকে প্রতি মাসে মোটা টাকা পেনশন পেতে পারেন তাঁরা। এই সুবিধা আমৃত্যু দিয়ে থাকে ব্যাঙ্ক। শুধু তা-ই নয়, ওই বাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার অধিকারও থাকবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উত্তরাধিকারীর। আবার ইচ্ছা করলে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটি চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন তাঁরা।

Advertisement
০৩ ১০

কী এই বিপরীত বন্ধকি বা রিভার্স মর্টগেজ? সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই), পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি) বা এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের মতো সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে ষাটোর্ধ্বেরা নিজের বাড়ি বন্ধক রেখে প্রতি মাসে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন। এতে বাড়ির মালিকের সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে ২০ বছরের চুক্তি করে ব্যাঙ্ক।

০৪ ১০

রিভার্স মর্টগেজ প্রকল্পের আরও একটি সুবিধা আছে। এতে বন্ধক দেওয়া ব্যক্তিকে কখনওই নিজের বাড়ি থেকে অন্যত্র যেতে হবে না। বাড়ির মাত্র ৪০ শতাংশ মালিকানা সরকারি বা বেসরকারি ব্যাঙ্কের হাতে তুলে দেবেন তিনি। সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান ওই ব্যক্তির বাড়িটিকে জামানত হিসাবে গচ্ছিত রেখে বিনিময়ে মাসে মাসে টাকা দিয়ে যাবেন। একটি উদাহরণের সাহায্যে গোটা বিষয়টি বুঝে নেওয়া যেতে পারে।

০৫ ১০

ধরা যাক, ষাটোর্ধ্ব কোনও ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে যে বাড়িতে থাকেন তার বর্তমান বাজারমূল্য চার কোটি। এই দম্পত্তির কোনও সন্তান নেই বা চাকরি, ব্যবসা ও বিবাহসূত্রে ছেলে-মেয়েরা বাড়ি থেকে দূরে অন্য শহরে থাকেন। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যে কোনও সরকারি বা বেসরকারি ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর বাড়ি বন্ধক রাখতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ২০ বছরের চুক্তিতে ওই বাড়ির ৪০ শতাংশ মালিকানার অধিকারী হবে ব্যাঙ্ক। বিনিময়ে বাড়ির মালিক প্রতি মাসে পাবেন দেড় লাখ টাকা।

০৬ ১০

এ দেশের আইন অনুযায়ী, রিভার্স মর্টগেজে বাড়ি দিয়ে দিলে সংশ্লিষ্ট প্রবীণ নাগরিক এবং তাঁর স্ত্রী যত দিন বেঁচে থাকবেন, তত দিন তাঁদের কোনও ভাবে উচ্ছেদ করতে পারবে না ওই ব্যাঙ্ক। শুধু তা-ই নয়, ব্যাঙ্ক থেকে প্রতি মাসে তাঁরা যে অর্থ পাবেন, সেটা পুরোপুরি করমুক্ত। ফলে অবসরজীবনে চিকিৎসার খরচ বা অন্যান্য সাংসারিক খরচের কথা ভাবতেই হবে না তাঁদের। ফলে পেনশন না থাকলে বাড়ি বড় রোজগারের হাতিয়ার হতে পারে, বলছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।

০৭ ১০

বাড়ির মালিক এবং তাঁর সঙ্গী (স্বামী বা স্ত্রী) মারা গেলে তাঁদের সন্তান বা উত্তরাধিকারীরা ব্যাঙ্ককে বন্ধকির টাকা পরিশোধ করে বাড়ির সম্পূর্ণ মালিকানা নিজের কাছে রাখতে পারেন। বন্ধকির টাকা মিটিয়ে দেওয়ার পর ওই বাড়ি বিক্রি করে দেওয়ারও পূর্ণ স্বাধীনতা পাবেন তাঁরা। অর্থাৎ, কোনও অবস্থাতেই তাঁদের বাড়ির মালিকানা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বাধ্য করতে পারবে না ব্যাঙ্ক।

০৮ ১০

এ-হেন বিপরীত বন্ধকির জন্য সবাই আবেদন করতে পারবেন, এমনটা নয়। আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ৬০ বছর বা তার বেশি হতে হবে। স্বামী-স্ত্রী যৌথ ভাবে রিভার্স মর্টগেজের আবেদন করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বয়সের সীমা ন্যূনতম ৫৮ বছর হতে হবে। তবে ব্যাঙ্ক ভেদে যৌথ আবেদনের ক্ষেত্রে নিয়মের তারতম্য আছে।

০৯ ১০

বিপরীত বন্ধকিকে একরকম ব্যাঙ্কের থেকে নেওয়া ঋণ বলা যেতে পারে। এর ঊর্ধ্বসীমা কখনওই এক থেকে দু’কোটির বেশি হবে না। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি সাধারণত দিল্লির ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন বা এনসিআর, মুম্বই, পুণে, চেন্নাই, অহমদাবাদ, বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদের পুর এলাকার বাড়িতে সর্বোচ্চ দু’কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে। অন্যান্য জায়গায় টাকার অঙ্ক বেশ কম।

১০ ১০

রিভার্স মর্টগেজে আবেদনকারীকে ঋণ দেওয়ার আগে বাড়ির বাজারদর যাচাই করবে ব্যাঙ্ক। বাড়ির বয়স, অবস্থান এবং অবস্থাও পরীক্ষা করবে তারা। বাড়িটি যদি উচ্চ চাহিদাপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত না হয়, তা হলে কম টাকা ঋণ মঞ্জুর করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement