রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডকে এসআইআরের নথি হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডকে বিশেষ নিবিড় সমীক্ষার (এসআইআর) নথি হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন সূত্রে খবর, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড এসআইআরের নথি হিসাবে গণ্য করা যায় কি না, তা বিবেচনা করতে বলেছিলেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)। কমিশন জানিয়েছে, নাগরিকত্বের প্রমাণ রয়েছে এমন নথি বিবেচনা করা হবে। সেই তালিকায় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পড়ে না।
বুধবার সব রাজ্যের সিইওদের সঙ্গে বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে কমিশন সিইওদের জানিয়েছিল, এসআইআরের জন্য নির্ধারিত ১১টি (সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দ্বাদশ নথি আধার আপাতত শুধু বিহারের জন্য) নথির বাইরে কোনও কিছু যদি নাগরিকত্বের প্রমাণ হয়, তা হলে তা কমিশনকে জানাতে পারেন তাঁরা। সব রাজ্যের সিইওকেই সেই কথা বলা হয়েছিল বলে কমিশন সূত্রে খবর। সূত্রের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের সিইও-কে রাজ্য সরকার প্রস্তাব দিয়েছিল, যে স্বাস্থ্যসাথীকেও এসআইআরের নথি হিসাবে ব্যবহার করা যায় কি না, তা দেখতে। সূত্রের খবর, বৈঠকে রাজ্যের তরফে দেওয়া সেই প্রস্তাব তুলে ধরেন সিইও। কমিশন সিইওর কাছে জানতে চায়, এই স্বাস্থ্যসাথী কি নাগরিকত্বের প্রমাণ। সিইও জানান, স্বাস্থ্যসাথী নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, তবে তা রাজ্যবাসীকে দেওয়া হয়। কমিশন তখন জানিয়ে দেয়, নাগরিকত্বের প্রমাণ হবে এমন নথিই শুধু এসআইআরের নথি হিসাবে গণ্য করা হবে।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ব্যক্তিপরিচয়ের প্রামাণ্য নথি হিসাবে আধার কার্ড ব্যবহার করা যাবে। তবে এই নিয়ম আপাতত শুধু বিহারের জন্যই। শীর্ষ আদালত এ-ও উল্লেখ করেছে, আধার কার্ড কখনওই নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। শুধু ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে আধার কার্ড।
সব ঠিক থাকলে আগামী মাসে, অর্থাৎ অক্টোবরে পুজোর মরসুমের পরেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশ জুড়ে শুরু হতে পারে এসআইআর। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। বিহারের পরে অন্য রাজ্যগুলিতেও যে এসআইআর শুরু হতে পারে, সে বিষয়ে আগেই আভাস দিয়ে রেখেছিল কমিশন। তবে দিন ক্ষণ নিশ্চিত করেনি।
আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এর আগে ২০০২ সালে পশ্চিমবঙ্গে শেষ এসআইআর হয়েছিল। ২০০২ সালের এসআইআর অনুসারে তৈরি ভোটার তালিকা আগেই প্রকাশ্যে এনেছে কমিশন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর থেকে এলাকাভিত্তিক সেই তালিকা ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। এ বার দু’দশকেরও বেশি সময় পরে পশ্চিমবঙ্গে ফের এসআইআর শুরু করতে উদ্যোগী কমিশন।
সম্প্রতি বিহারে এসআইআর-এর কাজ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এসআইআর চলাকালীন কমিশনের খসড়া তালিকা থেকে প্রায় ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ পড়েছিল। সেই বিষয়টি গড়ায় সুপ্রিম কোর্টেও। এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ-ও জানান যে, তিনি এসআইআরের বিরোধী। এ বার কমিশন জানাল, স্বাস্থ্যসাথী এসআইআরের নথি হিসাবে গণ্য হতে পারে না।