হামলার পরে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
মাঘের রাত। তার উপরে চারপাশে ঘন জঙ্গল। খেয়েদেয়ে লেপ চাপা দিয়ে শুয়ে পড়েছিল লাটাগুড়ি। হঠাৎ, একটি রিসর্টের গা লাগোয়া গাছ ভাঙল মড়মড়িয়ে। সেই শব্দেই সতর্ক হয়ে যান রিসর্টের রক্ষীরা। ডেকে তোলেন পর্যটকদের। তাঁরা উঠে দেখেন, রিসর্টের চত্বরে ক্ষীণ চাঁদের আলোয় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাতি।
মঙ্গলবার রাতে হাতিটি প্রথমে কাঠের কল ভেঙেছে। তারপর লাটাগুড়ির একের পর এক রিসর্টে হানা দিতে শুরু করে। একটি রিসর্টের কেয়ারটেকার জানান, দশ জন পর্যটক ছিলেন সেই রাতে৷ হাতি ঢুকে বিপদ হতে পারে বুঝে তিনি তাঁদের সতর্ক করে দেন৷ পরে তারা অন্য একটি রিসর্টে চলে যান৷’’
তবে এখানেই শেষ নয়৷ ওই রিসর্টের পর আরও একটি রিসর্টে হানা দেয় হাতিটি৷ একটি রিসর্টে ছিলেন হুগলি থেকে যাওয়া চার পর্যটক। তাঁরা অবশ্য জমিয়ে হাতির তাণ্ডব উপভোগ করেছেন৷ তাঁদের একজন বিশ্বজিৎ সেন বলেন, ‘‘চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুম থেকে উঠে দেখি সামনেই হাতি।’’
বনকর্মীরা সেই রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান৷ তাঁরাই পটকা ফাটিয়ে হাতিটিকে জঙ্গলের দিকে তাড়িয়ে দেন৷ লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী সম্পাদক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘মাঝে মধ্যেই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে হাতি রিসর্টে আসে৷’’
ওই দিনই হাতির হামলার মুখে পড়ে ডুয়ার্সের নাগরাকাটার বামনডাঙার চা বাগান লাগোয়া দু’টি স্কুলও। টুন্ডু জুনিয়র হাই স্কুলের একটি ঘরের দেওয়াল ভেঙে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে বেশ কিছু বেঞ্চ ভেঙে ফেলে হাতি৷ বেঁকিয়ে দেয় ঘরের পাখাও৷ অন্য স্কুলটির জানালা ও গ্রিল ভেঙে দেয় হাতি। এই প্রাথমিক স্কুলটি গতবার জেলার সেরা স্কুলের সম্মান পেয়েছিল৷ স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপক বড়ুয়া বলেন, ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত এই স্কুলে আঠারো বার হাতি হামলা চালিয়েছে৷ শেষবার হামলা হয় গত সেপ্টেম্বরেই৷