বিপর্যয় রুখতে কড়া নজর পূর্বাভাসে

প্রতি বছর তাপমাত্রা যেমন বাড়ছে, তেমনই এ রাজ্যে বদলে যাচ্ছে বৃষ্টির নির্ঘণ্টও। জলবায়ু বদলের প্রেক্ষিতে এমন দু’টি ঘটনাকে সামনে রেখেই বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন আবহবিজ্ঞানীরা। এই ধরনের বিপর্যয় ঠেকাতে নির্দিষ্ট পূর্বাভাসের উপরেই জোর দেওয়ার কথাও বলছেন তাঁরা। একই সুর রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্তাদেরও। তাদের সচিব কে সুরেশকুমার বলেন, আগাম সতর্কতা না পেলে এই ধরনের বিপর্যয় ঠেকানো কঠিন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৬ ০২:৫৯
Share:

প্রতি বছর তাপমাত্রা যেমন বাড়ছে, তেমনই এ রাজ্যে বদলে যাচ্ছে বৃষ্টির নির্ঘণ্টও। জলবায়ু বদলের প্রেক্ষিতে এমন দু’টি ঘটনাকে সামনে রেখেই বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন আবহবিজ্ঞানীরা। এই ধরনের বিপর্যয় ঠেকাতে নির্দিষ্ট পূর্বাভাসের উপরেই জোর দেওয়ার কথাও বলছেন তাঁরা। একই সুর রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্তাদেরও। তাদের সচিব কে সুরেশকুমার বলেন, আগাম সতর্কতা না পেলে এই ধরনের বিপর্যয় ঠেকানো কঠিন।

Advertisement

শনিবার কলকাতায় জলবায়ু বদলের প্রভাবে তৈরি হওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে একটি আলোচনাসভায় পুণের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানী পুলক গুহঠাকুরতা জানান, গত তিন দশকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, প্রতি বছরই গড় তাপমাত্রা বাড়ছে। বৃষ্টির ক্ষেত্রেও বদল ধরা পড়ছে। ন্যাশনাল থিম্যাটিক ম্যাপিং অর্গানাইজেশনের গবেষক কৌস্তুভ মুখোপাধ্যায় এ রাজ্যের বৃষ্টির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে বলছেন, বর্ষাকাল পেরিয়ে যাওয়ার পরে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ছে। বর্ষাকাল পেরিয়ে যাওয়ার পরে বৃষ্টি বাড়লে তা

দুর্যোগ ডেকে আনতে পারে বলে জানান তিনি।

Advertisement

বস্তুত, জলবায়ু বদলের ফলে আবহাওয়ার চরিত্র যে এমন খামখেয়ালি হবে, সে কথা সর্বশেষ রিপোর্টে জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা ইন্টার-গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি)। পরিবেশবিদদের মতে, বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে শুধু জলবায়ু বদলই হবে না। সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়বে এবং শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ও তৈরি হবে। এ বছরের রেকর্ড তাপমাত্রার ‘এল নিনো’ (প্রশান্ত মহাসাগরে জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি) তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ দিনের আলোচনাসভায় বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মনামি দত্ত জানান, গত ১০০ বছরে বঙ্গোপাসাগর লাগোয়া চিল্কা হ্রদের উষ্ণতা বেড়ে গিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে তা হলে উপায় কী? মৌসম ভবনের বিজ্ঞানীরা জানান, উন্নত উপগ্রহ-চিত্রের মাধ্যমে নির্দিষ্ট এলাকার ছবি তুলে তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তার ফলে ছোট এলাকার নির্দিষ্ট পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলছেন, আগে আলিপুর আবহাওয়া দফতর থেকে ২ দিনের আগাম পূর্বাভাস দেওয়া হতো। এখন ৫ দিনের পূর্বাভাস দেওয়া হয়। এলাকাভিত্তিক পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য নতুন নতুন কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য বাকি দফতরগুলির সঙ্গেও সমন্বয় বাড়ানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন