কর্মসংস্থানে ফার্মাসি

স্বল্প মূল্যে ওষুধ তৈরিতে ভারতের সুনাম রয়েছে বিশ্বে। জার্মানি, রাশিয়া, ফ্রান্স, ব্রাজিল, আমেরিকা-সহ বিশ্বের তাবড় দেশগুলিতে এখন ওষুধ রফতানি করছে ভারত।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৬ ০০:০০
Share:

স্বল্প মূল্যে ওষুধ তৈরিতে ভারতের সুনাম রয়েছে বিশ্বে। জার্মানি, রাশিয়া, ফ্রান্স, ব্রাজিল, আমেরিকা-সহ বিশ্বের তাবড় দেশগুলিতে এখন ওষুধ রফতানি করছে ভারত। বাজার এতটাই প্রসারিত যে, একটা সমীক্ষা বলছে আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে এদেশে ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টরে দুই কোটিরও বেশি কর্মসংস্থান নিশ্চিত। এমনিতে এখনই বিশ্বে তৃতীয় আমাদের ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প। সরকার যে ভাবে এই শিল্পে গুরুত্ব দিচ্ছে তাতে আগামী দিনে চাকা আরও ঘুরবে। একশো শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। গুজরাত, অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই শিল্পের উনিশটি এসইজেড রয়েছে। এই মুহূর্তে দশ হাজারেরও বেশি ওষুধ প্রস্তুতকারক ইউনিট চালু। প্রায় তিন হাজার ফার্মা কোম্পানি। স্বভাবতই এই শিল্পে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।

Advertisement

কেন পড়ব

Advertisement

ফার্মাসি নিয়ে পড়ার পরে ওষুধ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সরাসরি যুক্ত (ম্যানুফ্যাকচারিং কেমিস্টস) থাকতে পারেন, আবার ওষুধের গুণমান নিয়ন্ত্রণের কাজও (কোয়ালিটি কন্ট্রোল কেমিস্টস) করতে পারেন। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ফার্মাসিস্টের কাজ পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে হাসপাতালে ওষুধ আনানো, মজুত করা থেকে তা বিলি বা বিক্রি—পুরোটাই দেখতে হয়। অ্যাপোলো ফার্মাসি, মেড প্লাস বা ফ্রাঙ্ক রস-এর মতো সংস্থাগুলোতে কাজের ধরনটা আর একটু আলাদা, নাম কমিউনিটি ফার্মাসিস্ট। সরকারি চাকরির মধ্যে পাবলিক সার্ভিস কমিশন দিয়ে ড্রাগ ইনস্পেক্টর হওয়া যায়। যার পরে অ্যাসিস্ট্যান্ট ড্রাগ কন্ট্রোলার, ডেপুটি ড্রাগ কন্ট্রোলার, ড্রাগ কন্ট্রোলার অফ স্টেট এবং সর্বোপরি ডিসিআই বা ড্রাগ কন্ট্রোলার অফ ইন্ডিয়া পদ রয়েছে। সরকারি ল্যাবরেটরিগুলোতেও কাজ করা যায়। তবে, সবচেয়ে ভাল হয় ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিতে রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে গবেষণা করতে পারলে— নতুন ওষুধ তৈরির গবেষণা। আবার এই সবের মধ্যে না থেকে মার্কেটিং-এও চলে যেতে পারেন। যেখানে কাজের ধকল বেশি হলেও বেতন বেশ ভাল।

কী পড়ব

ফার্মাসি নিয়ে পড়তে চাইলে দ্বাদশ ক্লাসে অবশ্যই বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করতে হবে। এরপর চার বছরের ব্যাচেলর ডিগ্রি ( বি ফার্মা) করা যায় আবার দু’বছরের ডিপ্লোমাও (ডি ফার্মা) পড়া যায়। বেশিরভাগ কলেজেই বি ফার্মা পড়ার জন্য ভর্তি পরীক্ষা দিতে হয়। আমাদের রাজ্যে জয়েন্ট এন্ট্রান্স। তবে, বেসরকারি কলেজগুলিতে ম্যানেজমেন্ট কোটায় পড়ার সুযোগ করে নেওয়া যায়। ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য সাধারণত ভর্তি পরীক্ষা হয় না। দ্বাদশ ক্লাসে বিজ্ঞান বিভাগে পড়লেই হবে। ব্যাচেলর কোর্সের পরে মাস্টার ডিগ্রি (এম ফার্মা) করে নিলে ভাল। তারপরে পিএইচডি অর্থাৎ গবেষণার দিকে যাবেন কিনা, সেটা ব্যাক্তিগত ইচ্ছার উপরে নির্ভর করছে।

কোথায় পড়ব

কলেজে ভর্তির সময় অবশ্যই দেখে নিতে হবে, সেটি পিসিআই অর্থাৎ ফার্মাসি কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া অনুমোদিত কিনা। আমাদের রাজ্যে পড়ার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় খুব ভাল। উচ্চশিক্ষার জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফার্মাসিউটিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ রয়েছে কলকাতায়। এছাড়াও বেশ কিছু বেসরকারি কলেজ রয়েছে কলকাতা, দুর্গাপুর, উলুবেড়িয়া, কল্যাণী, হলদিয়া-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। ফার্মাসি কোর্সের জন্য ভিন্্ রাজ্যের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে, মনিপাল কলেজ অফ ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেস, চণ্ডীগড়ের ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অফ ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেস, নয়াদিল্লিতে জামিয়া হামদর্দ, পুনের পুনা কলেজ অফ ফার্মাসি, রাঁচির বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, উটি, মাইশোরের জেএসএস কলেজ অফ ফার্মাসি, কোয়েম্বত্তুরের পিএসজি কলেজ অফ ফার্মাসি, বেঙ্গালুরুর আল আমীন কলেজ অফ ফার্মাসি, বেনারসের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, গোয়া কলেজ অফ ফার্মাসি, আহমেদাবাদের এলএম কলেজ অফ ফার্মাসি ইত্যাদি।

ব্যাচেলর কোর্সে স্পেশালাইজেশন থাকে না। কিন্তু মাস্টার্স করার সময় ফার্মাসিউটিক্স, ফার্মাকগনোসি, ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি, বায়োকেমিস্ট্রি, ফার্মাসিউটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি ভাগ রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন