ইডি দফতরে সুদীপ। নিজস্ব চিত্র
ঢুকেছিলেন বেলা পৌনে ১২টায়। বেরোলেন সন্ধ্যা ৭টার পরে।
অর্থ লগ্নি সংস্থা রোজ ভ্যালির আর্থিক নয়ছয়ের ঘটনায় শুক্রবার সাত ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বেলা পৌনে ১২টায় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি-র দফতরে পৌঁছে যান সুদীপবাবু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কয়েক জন দেহরক্ষী।
সন্ধ্যায় ইডি-র দফতর থেকে বেরোনোর সময় সুদীপবাবু শুধু বলেন, ‘‘আমি ভাল আছি। এই বিষয়ে এখন কোনও মন্তব্য করব না।’’ ইডি সূত্রের খবর, সুদীপবাবু এ দিন যে-হিসেবপত্র দেখিয়েছেন, তা পর্যাপ্ত বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন না। তাই তাঁকে আবার ডেকে পাঠানো হতে পারে।
অর্থের বিনিময়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে রোজ ভ্যালিকে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি সুদীপবাবুকে ডেকে জেরার পরেই গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। তদন্তকারীরা তাঁকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যান। সেখানকার জেলে থাকাকালীন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে। সম্প্রতি তিনি জামিন পান।
তার পরেই ইডি এ দিন সুদীপবাবুকে তলব করে যে-ভাবে দীর্ঘ ক্ষণ জেরা করল, তা নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘ওঁর অপরাধটা কী? কেন বারবার ডাকা হচ্ছে সুদীপদাকে? এক বার টিকিট করে দিয়েছিল, তা-ই? আদালতের মামলায় সুদীপদাই জিতবে বলে আমার বিশ্বাস। ওকে এ দিনের দলীয় বৈঠকেও আসতে দেওয়া হল না।’’
তদন্তকারীদের অভিযোগ, রোজ ভ্যালি হোটেল ও এন্টারটেনমেন্ট নামে বিভিন্ন প্রকল্প মারফত কয়েক হাজার কোটি টাকা তোলা হয়েছিল। সেই টাকা বিভিন্ন খাতে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জুলাইয়ে ওই অভিযোগের ভিত্তিতে রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে বিচার ভবনে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে মামলা করে ইডি।
ইডি-র এক কর্তার কথায়, রোজ ভ্যালির ওই টাকার একটি অংশ গিয়েছে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে। এ দিন এই বিষয়ে সুদীপবাবুর কাছে জানতে চান তদন্তকারীরা। তা ছাড়া রোজ ভ্যালির টাকায় সুদীপবাবু বিদেশ ভ্রমণ করেছিলেন বলেও অভিযোগ। তাঁর কাছ থেকে সেই সংক্রান্ত হিসেবপত্রও চেয়ে পাঠানো হয়েছিল বলে জানিয়েছে ইডি।