Farmers

সরকার আলু কিনলেও ক্ষতির আশঙ্কায় চাষিরা

সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের কালনায় এক আলু চাষির ঝুলন্ত দেহ মেলার পরে তাঁর পরিবার দাবি করে, চাষে ক্ষতি আঁচ করে হতাশায় আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৩ ০৮:১০
Share:

রাজ্য সরকার চাষিদের কাছে সাড়ে ৬ টাকা কেজি দরে আলু কিনবে বলে জানিয়েছে। প্রতীকী ছবি।

অনুকূল আবহাওয়া দেখে আশায় বুক বেঁধেছিলেন চাষিরা। কিন্তু সেই আশা অনুযায়ী ফলন মিলছে না। আবার দাম যা মিলছে, তাতে চাষের খরচ জোগাড় নিয়েই সংশয় রয়েছে, অভিযোগ রাজ্যের বহু আলু চাষির। রাজ্য সরকার চাষিদের কাছে সাড়ে ৬ টাকা কেজি দরে আলু কিনবে বলে জানিয়েছে। তবু লাভের মুখ দেখার আশা তাঁরা করছেন না বলে চাষিদের বড় অংশের দাবি।

Advertisement

সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের কালনায় এক আলু চাষির ঝুলন্ত দেহ মেলার পরে তাঁর পরিবার দাবি করে, চাষে ক্ষতি আঁচ করে হতাশায় আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে অভিযোগে কয়েক দিন আগে কোচবিহারে জাতীয় সড়কে আলু ফেলে রেখে বিক্ষোভ দেখান কিছু চাষি। আজ, শনিবার দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে কৃষকসভা।

রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘‘অভাবি বিক্রি রুখতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আলু কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রান্তিক চাষিরা যাতে হিমঘরে আলু রাখতে পারেন, সে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’’ কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানা যায়, রাজ্যের ১১টি জেলায় ১০ লক্ষ টন আলু কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Advertisement

কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানা যায়, গত মরসুমে ৪.৪৭ লক্ষ হেক্টর জমিতে ১২৪ লক্ষ টন আলু উৎপাদন হয়েছিল। এ বার প্রায় ৪.৭২ লক্ষ হেক্টরে চাষ হয়েছে। ১৪০ লক্ষ টন উৎপাদন হবে, অনুমান দফতরের। রাজ্যের বাজারে প্রয়োজন প্রায় ১০০ লক্ষ টন আলু। হিমঘর মালিক সমিতির দাবি, গত বছর প্রায় ৬৩ লক্ষ টন আলু হিমঘরে ছিল। এ বার তা ৭০ লক্ষ টন হওয়ার সম্ভাবনা।

তবে দক্ষিণবঙ্গে অনেক চাষির অভিযোগ, বিঘা প্রতি গড় উৎপাদন কমেছে। মেমারির আব্দুল বাসাদ, আরামবাগের সমীর সিংহদের কথায়, “বিঘায় গড়ে ১০০ বস্তা (প্রতি বস্তা ৫০ কেজি) আলু হয়। কিন্তু এ বার গড়ে ৭৫ বস্তা ফলন মিলছে।’’ চাষিদের দাবি, বিঘা প্রতি চাষে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ। কয়েক দিন আগে মাঠ থেকে জ্যোতি আলু ৪-৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। সরকারের আলু কেনার ঘোষণার পরে দাম সামান্য বাড়ছে। তবু প্রতি বিঘায় ৬-৮ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে বলেঅভিযোগ চাষিদের।

হিমঘর মালিক ও আলু ব্যবসায়ীদের দাবি, রাজ্য থেকে প্রতি বছর ২০ লক্ষ টন আলু ভিন্‌ রাজ্যে যেত। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের আলুর দাম কমায়, গত বছর থেকে সেখানকার আলু নানা রাজ্যের বাজার দখল করেছে। ফলে রফতানি কেমন হবে, প্রশ্ন রয়েছে। দামে কেমন প্রভাব পড়বে? ‘প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী’ সংগঠনের চেয়ারম্যান লালু মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আলু এখনও চাষিদের হাতে রয়েছে। সরকারের আলু কেনার ঘোষণায় বাজারে দাম পড়তির দিকে নেই। স্থিতাবস্থা রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন