ভিডিও-শুনানির পথে সব জেলই

শুরুটা হয়েছিল খাদিম-কর্তা অপহরণ কাণ্ডের মূল সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী আফতাব আনসারিকে দিয়ে। নবান্ন ঠিক করেছে, এ বার রাজ্যের সব জেলেই ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শুনানির ব্যবস্থা করা হবে।

Advertisement

অত্রি মিত্র

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫২
Share:

ওরা বাইরে বেরোলেই বিপদের আশঙ্কা। দূর থেকে ‘টার্গেট’ লক্ষ করে শত্রুপক্ষের যে কেউ মেরে ফেলতে পারে ওদের। পুলিশের সামান্য অন্যমনস্কতার সুযোগ নিয়ে কেউ পালিয়েও যেতে পারে। আবার, যাওয়া-আসার পথে পাচারকারীদের মাধ্যমে ওদের কাছে পৌঁছে যেতে পারে মাদকদ্রব্য। অতএব, যতটা সম্ভব গারদের মধ্যেই কয়েদিদের শুনানির ব্যবস্থা করতে হবে — জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই লক্ষ্যে এই রাজ্য অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে বলে দাবি কারা দফতরের।

Advertisement

শুরুটা হয়েছিল খাদিম-কর্তা অপহরণ কাণ্ডের মূল সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী আফতাব আনসারিকে দিয়ে। নবান্ন ঠিক করেছে, এ বার রাজ্যের সব জেলেই ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শুনানির ব্যবস্থা করা হবে।

আফতাবের মতো ‘হাই প্রোফাইল’ বন্দিকে জেল থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়াটা বড় রকমের ঝুঁকির কাজ হয়ে যেতে পারে। সে কথা মাথায় রেখেই বছর তিনেক আগে কলকাতার আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শুনানি হয়েছিল আফতাবের।

Advertisement

আর তার পর-পরই সুপ্রিম কোর্টের তরফে নির্দেশ আসে, সব রাজ্যের কেন্দ্রীয় ও জেলা সংশোধনাগারগুলিতে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শুনানি চালু করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির ব্যবস্থা করে দেবে শীর্ষ আদালতই।

কারা দফতর সূত্রে খবর, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে এ রাজ্যে ভিডিও-শুনানির পাইলট প্রকল্পটি চালু হয় বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। তাতে সাফল্য মেলার পরে ধাপে ধাপে সব কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার এবং জেলা সংশোধনাগার মিলিয়ে মোট ১৯টি জেলে নতুন ব্যবস্থা চালু হয়ে গিয়েছে। এ বার সাব-জেল স্তরের ৩৭টি জেলেও এই পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলেছে।

এক কারা-কর্তা বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে রাজ্যের সাব-জেলগুলিতে ভিডিও-শুনানির জন্য পৃথক ঘর চিহ্নিত করা হয়েছে।’’ এ বার ঘরগুলিতে ওয়েব ক্যামেরা, ২১.৫ পিসিআর মনিটর, একটি কম্পিউটার ডেস্কটপ, ৪০ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন, ওয়্যারলেস স্পিকার এবং মাইক্রোফোন রাখা হবে। থাকবে ইন্টারনেট চালু করার জন্য লিজ লাইন এবং এইচডিএমআই কেব্‌লও।

ভিডিও-শুনানির সুবিধার কথা বোঝাতে গিয়ে ওই কর্তা জানান, এতে বিচারের কাজে গতি আসবে। কী রকম? তাঁর কথায়, ‘‘অনেক সময় শুনানির দিন স্রেফ গাড়ির অভাবে বন্দিকে আদালতে নিয়ে যাওয়া যায় না। তা ছাড়াও আরও অনেক ধরনের ঝুঁকি থাকে। তার চেয়ে জেলে বসে শুনানিই ভাল।’’ তবে সবাইকে নয়, দাগি এবং ঝুঁকিপূর্ণ বন্দিদেরই ভিডিও-শুনানিতে বসানো হবে বলে জানাচ্ছেন ওই কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন