অমরেন্দ্রকুমার সিংহ।
অশান্তি। রক্তপাত। মৃত্যু। আদালত। পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। বছরখানেক আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এ-সবের সাক্ষী ছিলেন বঙ্গবাসী। সেই সব ঘটনায় অভিযোগের নিশানায় ছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ। অবসরের দিনেও সেই সব প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করেই সরোজিনী নায়ডু সরণিতে কমিশনের দফতর ছাড়লেন তিনি। কমিশনার হিসেবে মঙ্গলবারই শেষ দিন ছিল অমরেন্দ্রকুমারের।
দেশের ভোট পরিচালনার ভার রয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাঁধে। আর বঙ্গে কমিশনের অংশ হিসেবে রয়েছে মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)-এর দফতর। সংবিধান মেনে কমিশনের হাতে রয়েছে যাবতীয় প্রশাসনিক ক্ষমতা। তার পরেও লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গের পরিস্থিতি ক্রমশই উত্তপ্ত হচ্ছে। সেই সব প্রসঙ্গেই এ দিন আলোচনা করেন অমরেন্দ্রকুমার। সেই সময়ে তাঁর সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদেরও যে অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে কাজ করতে হয়েছিল, সে-কথাও ওঠে এ দিনের আলোচনায়। পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত বিষয়ে প্রায়ই আদালতে দৌড়তে হত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিদের। তার মধ্যেও ছিল আইনজীবীদের ধর্মঘট। ফলে কমিশন কী ভাবে পরিস্থিতি সামলেছিল, অমরেন্দ্রকুমারের অবসরের দিনেও তা নিয়ে চর্চা হয় বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর। আগেও তিনি ‘ফেয়ারওয়েল’ বা বিদায় সংবর্ধনা ছাড়াই দফতর ছাড়েন তিনি।
২০১৫ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত বহুচর্চিত বিধাননগর পুরসভার ভোট শেষে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন অমরেন্দ্রকুমার। বিভিন্ন সময়ে তাঁর বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। এমনকি, পঞ্চায়েত ভোট চলাকালীন তাঁর ছবি ব্যবহার করে ‘মিম’ তৈরি করে নিশানাও করা হয়েছিল অমরেন্দ্রকুমারকে। পঞ্চায়েত ভোট পর্ব সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব পরে দেবেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সব প্রশ্নের উত্তর প্রকাশ্যে আসেনি। তবে লোকসভা ভোট পর্বে বঙ্গের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের স্মৃতির অবতারণা করেই এ দিন বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ দফতর ছাড়েন অমরেন্দ্রকুমার। ফোন ও এসএমএসে যোগাযোগ করা হলেও এই সব বিষয়ে তাঁর জবাব মেলেনি।