পাশে: দলীয় মঞ্চে নারদ অভিযুক্তদের উঠে দাঁড়াতে বলে নেত্রীর অভয়, কিছুই প্রমাণ করা যাবে না। শুক্রবার নেতাজি ইন্ডোরে। ছবি: প্রদীপ আদক।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁতের অভিযোগে দীর্ঘদিন সরব বিরোধীরা। এ বার বামেদের সঙ্গেই বিজেপির সমঝোতার পাল্টা অভিযোগ আনলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গেই দলের কর্মীদের প্রতি তাঁর পরামর্শ, সিপিএম কর্মীদের বোঝাতে হবে, তাঁরা যেন বিজেপির দিকে চলে না যান!
দলের সাংগঠনিক নির্বাচনের মঞ্চ থেকে শুক্রবার মমতার কটাক্ষ, ‘‘দিল্লি থেকে এল রাম, সাথে জুড়ে গেল বাম! এই স্লোগানটা তৈরি করুন ভাল করে।’’ দেশে জরুরি অবস্থার পরে কংগ্রসের সঙ্গে সিপিআইয়ের সমঝোতাকে কটাক্ষ করে সিপিএমের স্লোগান ছিল, ‘দিল্লি থেকে এল গাই, সঙ্গে বাছুর সিপিআই’! কংগ্রেসের তৎকালীন গাই-বাছুর নির্বাচনী প্রতীককে ঘিরেই এমন ছড়া। বামেদের কটাক্ষ করেও মমতা কিন্তু দলের কর্মীদের বলেছেন, ‘‘পাড়ায় পাড়ায় সিপিএমের লোকদের বুঝিয়ে-বাঝিয়ে বলুন, বিজেপি-তে যাবেন না।’’
টানা কয়েক দশক মমতার রাজনীতি দাঁড়িয়েই ছিল সিপিএম-বিরোধিতার উপরে। কিন্তু রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের সাম্প্রতিক উত্থান তাঁর চিন্তা বাড়িয়েছে। ইদানীং মমতা বলছেন, কংগ্রেস-বামের ভোট একসঙ্গে ছিল বলেই বিধানসভায় বিজেপি বেশি কিছু করতে পারেনি। দক্ষিণ কাঁথির বিধানসভা উপনির্বাচনে বাম ভোট ক্ষয়ে গিয়ে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসায় মমতার উদ্বেগ বেড়েছে। এখন তিনি চাইছেন, বামেরা কিছুটা জমি ধরে রাখতে পারলে বিজেপির মোকাবিলা সহজ হয়।
সিপিএম অবশ্য বুঝিয়ে দিয়েছে, বিজেপি-মোকাবিলায় মমতার আন্তরিকতা নিয়েই তারা সন্দিহান। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি-কে রাজ্যে নিয়ে এসে খাল কেটে কুমীর ডেকেছিলেন উনিই। যখন প্রয়োজন হয়েছে, তখনই বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করেছেন।’’
আরও পড়ুন:ভয় পাবেন না, আশ্বাস দলনেত্রী মমতার
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আবার মনে করিয়ে দেন, বামফ্রন্ট নেতৃত্ব নবান্নে দাবিপত্র দিতে গেলে তাঁদের ফিশ ফ্রাই খাইয়ে বিজেপি-কে ঠেকানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন মমতা। দিলীপবাবুর সংযোজন, ‘‘সিপিএমের সংগঠন উঠে যাচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী দেখছি, তাদের চেয়েও বেশি চিন্তিত! এ থেকেই তো স্পষ্ট, সিপিএমের সঙ্গে কারা আছে!’’
বিজেপির বিরুদ্ধে দল ভাঙার অভিযোগও এ দিন করেছেন মমতা। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের কটাক্ষ, ‘‘দল ভাঙানোর রানি অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন!’’