মুক্ত: জামিন পেয়ে অনুপম (সামনে) ও দেবজিৎ (পিছনে)। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।
দু’দিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পরে ফেসবুক কাণ্ডে ধৃত ব্যবসায়ী দেবজিৎ রায় এবং ব্যাঙ্ককর্মী অনুপম তরফদারকে জামিন দিল আদালত।
রবিবার দুপুরে বালুরঘাটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম)কোর্টে দু’জনকে হাজির করে পুলিশ। সিজেএম কোর্টের বিচারক হেদায়েতুল্লা ভুটিয়া প্রত্যেকের দু’হাজার টাকার বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেন।
এ দিন দুপুরে টানটান উত্তেজনার মধ্যে বালুরঘাট থানা থেকে পুলিশ দেবজিৎ ও অনুপমকে আদালতে নিয়ে আসে। সেই সময় বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনের অনেকে আদালত চত্বরে ভিড় করেছিলেন। হাজির ছিলেন ওই দু’জনের আত্মীয়স্বজনেরাও।
পুজোর সময় শহরে মোটরবাইক ও ছোটগাড়ি চলাচলে পুলিশি নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেন দেবজিৎ ও অনুপম। সে জন্য কালীপুজোর রাতে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন শুক্রবার তাদের আদালতে হাজির করে দু’দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল।
এই নিয়ে শুধু বালুরঘাটেই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। একটি ফেসবুক পোস্টের জন্য কী ভাবে পুলিশ কাউকে ধরে দু’দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিতে পারে, সেই প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। ২৪ ঘণ্টা আগে শনিবার শহরের অভিযাত্রীপাড়া এলাকার বাড়িতে বসে দেবজিৎবাবুর স্ত্রী জানান, তাঁর স্বামী জামিন না পেলে তিনি আত্মহত্যা করবেন।
এ দিন দেবজিৎবাবুদের আইনজীবী শিবতোষ চট্টোপাধ্যায় আদালতকে জানান, দু’দিনের হেফাজতে থেকে দু’জনেই তদন্তে সাহায্য করেছেন। পুলিশও এ দিন আর নতুন করে তাদের নিজেদের হেফাজতে নিতে আবেদন জানায়নি। সরকারি আইনজীবী জয়ন্ত মজুমদারও জামিনের বিরোধিতা করেননি। এর পরই বিচারক দুজনের জামিন মঞ্জুর করেন।
পরে শিবতোষবাবু দাবি করেন, ফেসবুক কাণ্ডে পুলিশ ওই দুজনের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে হ্যাকিং, অন্যের পোস্ট শেয়ার করে উস্কানি ও গণ্ডগোল বাধানোর চেষ্টার মতো একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করেছিল। সেগুলি দেবজিৎবাবুদের ক্ষেত্রে কোনও ভাবেই প্রযোজ্য ছিল না বলে আদালতকে আইনজীবীরা তথ্য দিয়ে জানান। তাঁদের যুক্তি, ফেসবুকে ওই পোস্টগুলির ফলে এখনও পর্যন্ত কোনও রকম গোলমাল বাঁধেনি।
দু’জনের জামিনের খবরে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। তবে সাংবাদিকদের কাছে মুখ খুলতে বা মালা পরে অভিনন্দন গ্রহণ করতে চাননি দেবজিৎ। অনুপম বলেন, গণতন্ত্রের জয় হল।